Saturday, July 28, 2007

নারায়ণ দেবনাথের ছবি


আজ থেকে প্রায় চল্লিশ পঞ্চাশ বছর আগে কলকাতার একটি সেরা প্রকাশনা সংস্থা ছিল দেব সাহিত্য কুটির । এখনও অবশ্য এঁরা আছেন । কিন্তু সে সময়ে ছোটদের বিভিন্ন বই এবং ম্যাগাজিন প্রকাশে দেব সাহিত্য কুটির ছিল শ্রেষ্ঠ । দেব সাহিত্য কুটিরের ছোটদের বইগুলিতে গল্প ও অন্যান্য রচনার সাথে যে সমস্ত ইলাস্ট্রেশন গুলি দেওয়া হত সেগুলির মান খুবই উন্নত ছিল । এখন কোন ছোটদের বইতে সেরকম মানের ইলাস্ট্রেশন আর দেখা যায় না ।

দেব সাহিত্য কুটিরের শিল্পীদের ভিতরে অন্যতম হলেন নারায়ণ দেবনাথ । যিনি মূলত বাঁটুল দি গ্রেট, হাঁদাভোঁদা, আর নন্টে ফন্টে কমিকস সিরিজের জন্য বিখ্যাত । কিন্তু তিনি দেব সাহিত্য কুটিরের বহু বইতে ইলাস্ট্রেশানও করেছেন । সেরকমই পাঁচটি ইলাস্ট্রেশান এখানে পোস্ট করলাম । পরে আরো পোস্ট করব ।





হিটলারের হুঙ্কার

তারপর কি হল .... আমরা সবাই জানি

(লেখাটি স্ক্যান করা হয়েছে আজ থেকে প্রায় সত্তর বছর আগের সচিত্র মাসিক বসুমতী পত্রিকা থেকে)

Sunday, July 22, 2007

ক্যানিবাল হলোকস্ট


দিন কয়েক আগে ক্যানিবাল হলোকস্ট (cannibal Holocaust) সিনেমাটি দেখবার সুযোগ হল । সিনেমার ইতিহাসে ভয়াবহতম এবং প্রচুর বিতর্কিত একটি সিনেমা হল ক্যানিবাল হলোকস্ট ।

আমার এক বন্ধুকে অনুরোধ করেছিলাম সিনেমাটি ডাউনলোড করবার জন্য । দিন কয়েক পরে সে ফোন করে জানাল যে সে সিনেমাটি ডাউনলোড করেছে আর সিনেমাটি দেখে সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে । সে আরো বলল যে এরকম জঘন্যতম সিনেমা সে এর আগে কখনও দেখেনি ।
যাই হোক রটন টোম্যাটোস এ দেখলাম সিনেমাটির রেটিং ৬০ শতাংশ । তার মানে এটি একটি একেবারে রদ্দি সিনেমা নয় ।

সিনেমার শুরুটা দেখে এর ভিতরে কি আছে সেটা বোঝা সম্ভব নয় । সিনেমা শুরু হয় খুব সুন্দর একটি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের সাথে আমাজন অববাহিকার প্লেন থেকে তোলা দৃশ্যের মাধ্যমে । শুরুটা দেখে বেশ ভালই লাগল ।
গল্পটি হচ্ছে পাঁচজনের একটি দল আমাজনের জঙ্গলে যায় নরখাদক উপজাতির উপর একটি ডকুমেন্টারি তুলবে বলে । কিন্তু তারা আর ফিরে আসে না । তখন নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অ্যানথ্রোপলজিস্ট তাদের খুঁজতে যায় এবং দেখে যে সেই দলের সবাই নরখাদক উপজাতির হাতে মারা গেছে । এবং নানা ঘটনার পর গভীর জঙ্গলে সেই নরখাদক উপজাতিদের কাছ থেকে আগের মৃত দলের তোলা ফিল্মের রোলগুলি উদ্ধার করে নিয়ে সে ফিরে আসে ।

এর পরে দেখানো হয় সেই ফিল্ম রোলগুলিতে কি আছে । আগের দলটি জঙ্গলের ভিতর দিয়ে এগোবার সময় একটি কচ্ছপ মেরে খায় । সিনেমাটিতে কচ্ছপটিকে কিভাবে মারা হল তা বিস্তৃতভাবে দেখান হয়েছে । শুটিং এর জন্য সত্যিই একটি বিরাট কচ্ছপকে হত্যা করা হয়েছিল । এরপরে সেই দলের একজন সাপের কামড়ে মারা যায় ।
তারপরেও দলটি এগোতে থাকে । একটি গ্রামে ঢুকে তারা আগুন লাগিয়ে দেয় ।তারপর দলের সদস্যরা একটি উপজাতি মেয়েকে ধর্ষন করে । তাদের দলে একটি মেয়েও ছিল । সে তার সঙ্গীদের বাধা দেবার চেষ্টা করে কিন্তু সফল হয় না । পরে দেখা যায় যে সেই ধর্ষিত মেয়েটিকে তার উপজাতির মানুষেরা হত্যা করে একটি কাঠের উপর গেঁথে টাঙিয়ে রেখেছে ।
এরপরে যখন তারা নরখাদক উপজাতির কাছাকাছি হয় তখন তাদের আক্রমনে তারা সবাই একে একে নিহত হয় ।

সিনেমাটি এই সমস্ত বিষয়ই খুব খোলাখুলিভাবে দেখানো হয়েছে । যা দেখলে নরম মনের কোন মানুষের গা গুলিয়ে উঠতে বাধ্য ।
এছাড়া বহু দৃশ্য আছে যাতে ধর্ষন আর খুন দেখান হয়েছে । মানুষ খুনের দৃশ্যগুলি এত ভয়াবহ যে দেখে মনে হয় যেন সত্যিই কোন মানুষকে খুন করা হচ্ছে । এছাড়া খুনের পর তাদের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে উপজাতিদের উল্লাস ও খাওয়ার দৃশ্য ভয়াবহতম ।

মানুষ মরার দৃশ্যগুলি এতই স্বাভাবিক হয়েছিল যে ইটালিতে সিনেমাটি রিলিজের পরে সিনেমার পরিচালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল । কারন এটা সন্দেহ করা হয়েছিল সে শুটিং-এর প্রয়োজনে সিনেমার কলাকুশলীদের সত্যিই মেরে ফেলা হয়েছে । পরে অবশ্য পরিচালক কলাকুশলীদের একটি অনুষ্ঠানে হাজির করার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় ।
তবে শুটিং-এর জন্য সত্যিকারের কোন মানুষ মারা না হলেও সাতটি প্রাণীকে হত্যা করা হয়েছিল । যার মধ্যে একটি কচ্ছপ এবং একটি একটি বাঁদরও ছিল ।

সিনেমাটিতে বহু নগ্ন এবং যৌন দৃশ্য আছে । তবে যাই হোক এই সিনেমাটি কখনই পর্নোগ্রাফি গোত্রের মধ্যে পড়ে না । বিষয়বস্তুর কারনে পৃথিবীর বহুদেশই এই সিনেমাটি নিষিদ্ধ বা বহুভাবে সেন্সর করা ।

এতকিছুর পরেও দেখার পর আমার মনে হয়েছে এটি একটি ভাল সিনেমা । সিনেমাটি শুটিং করা হয়েছে কিছুটা ডকুমেন্টারির কায়দায় । যেটা আমার কাছে কিছুটা নতুনত্ব লেগেছে । আর জঙ্গলের বাইরের মানুষ কিভাবে জঙ্গলের আদিবাসীদের শোষন করে সেটাও তুলে ধরা হয়েছে । তথ্যচিত্রকারী দলটি যদি সেই উপজাতি মেয়েটিকে ধর্ষণ না করত তাহলে হয়ত তাদের মরতে হত না ।

আমার এই সিনেমার জন্য রেটিং দশ এ ছয় ।

(উপরের ছবিটি নেওয়া হয়েছে উইকিপিডিয়া থেকে ।)


আমার নাম লেডি চ্যাটার্জি -- আমি সারারাত চ্যাট করি

লেডি চ্যাটার্জি

Saturday, July 21, 2007

প্লেবয় না সানন্দা




সানন্দা কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার গ্রুপের একটি মহিলা পত্রিকা । তবে তারা এতে যে সমস্ত ছবি ছাপছে তাতে এটিকে প্লেবয় পত্রিকার ভারতীয় সংস্করন বলে ভুল হতে পারে ...


ছবিগুলি যদি কোন মেনস ম্যাগাজিনে ছাপা হত তাহলে আপত্তির কোন কারন থাকত না । তবে মেয়েদের ম্যাগাজিনে এরকম ছবি ছাপার অর্থ কি ? মনে হয় ছবির লোভ দেখিয়ে কিছু পুরুষদের কাছেও পত্রিকাটিকে বেচাই মুখ্য উদ্দেশ্য ।


কিছু বলার আছে কি ?






Monday, July 09, 2007

প্রাণকুমারের স্মৃতিচারণ

কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম কলকাতার কলেজ স্ট্রীটে বই কিনব বলে । সেখানে রাস্তার ধারে যারা পুরনো বই বেচে তাদেরই একজনেরই কাছে পেয়ে গেলাম পোকায় কাটা পুরোনো বই খানা ।
বইটির নাম প্রাণকুমারের স্মৃতিচারণ । লেখক প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায় । পাঁচশো পাতার বই । দাম জিজ্ঞাসা করতে দাম হাঁকলো আশি টাকা । আমি বললাম চল্লিশ টাকা । তাতে সে দিতে রাজি হচ্ছিল না । কিন্তু আমাকে চলে যেতে দেখে অবশেষে রাজি হল চল্লিশ টাকায় দিতে । অতএব কিনে ফেললাম বই খানা ।
প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায় আমার প্রিয় লেখকদের মধ্যে অন্যতম । জানি না এখন অন্য কেউ তাঁর লেখা বই পড়েন কিনা । খুব বেশি বই তিনি লেখেননি । আমার ধারনা মেরেকেটে দশ এগারোটির মত বই তিনি লিখেছেন । বেশিরভাগই স্মৃতিচারণ, ভ্রমনকাহিনী আর ধর্ম সম্পর্কীয় লেখা ।
প্রাণকুমারের স্মৃতিচারণ আমার পড়া প্রমোদকুমারের তৃতীয় বই । প্রথম যে বইটি পড়েছিলাম সেটি হল হিমালয়পাড়ে কৈলাস এবং মানসসরোবর । ১৯১৮ সাল নাগাদ তিনি কৈলাস ও মানসসরোবর ভ্রমণে গিয়েছিলেন তারই বর্ণনা । প্রথম বইটি পড়েই আমার তাঁর লেখা ভাল লেগে যায় । বেশ সরল সাধাসিধে ভাষায় লেখা ভ্রমণকাহিনী ।
তাঁর লেখা দ্বিতীয় বইটি যেটা আমি পড়ি সেটা হল তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গ । এই বইটি আমার পড়া শ্রেষ্ঠ বইগুলির মধ্যে অন্যতম । লেখক একসময় ভবঘুরের মত ঘুরে বেড়াতেন নানা জায়গায় এবং সাধু এবং তান্ত্রিকদের সাথে মেলামেশা করতেন । তাঁর সেই সময়ের অভিজ্ঞতা নিয়েই লিখেছিলেন তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গ ।
এই দুটি বই পড়বার পর আমার প্রমোদকুমারের লেখা আরও বই পড়বার ইচ্ছা হয় । কিন্তু তাঁর আর কোন বই হাতে পাই নি । তারপর হঠাৎই হাতে পেলাম প্রাণকুমারের স্মৃতিচারণ ।
প্রাণকুমারের স্মৃতিচারণ হল প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায়ের লেখা আত্মজীবনী । তবে এতে তাঁর পুরো জীবনের কথা নেই । তাঁর জন্ম ১৮৮৫ থেকে আরম্ভ করে ১৯১০-১১ মোটামুটি ছাব্বিশ বছরের জীবনকাহিনী এতে আছে ।
সেই সময়ে কলকাতার একান্নবর্তী ব্রাহ্মণ পরিবারের সামাজিক রীতিনীতি এবং তাঁদের দৈনন্দিন জীবন কেমন ছিল তার একটা ধারনা এই বইটি থেকে পাওয়া যায় ।
বইটি পড়তে পড়তে মনে হয় আমাদের সময় থেকে মাত্র একশো বছর আগে আমাদের সমাজজীবন কতটা অন্যরকম ছিল ।
প্রমোদকুমারের ছোটবেলা খুব একটা ভাল কাটেনি । বদরাগী বাবার হাতে মার খেতে খেতে আর তাঁর ফাইফরমাশ খাটতে খাটতে তাঁর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠত । তাঁর নিজের কোন স্বাধীনতা ছিল না ।
কৈশোরে পদার্পন করার পরে পরেই তাঁর বিয়ে দেওয়া হয় । আর তাঁর সতেরো আঠারো বছর বয়সেই তিনি হয়ে যান দুই মেয়ের বাপ । যখন তাঁর বিয়ে কি সেটা ঠিকমতো বুঝে ওঠার বয়সও হয়নি । আবার যখন তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর স্ত্রী দ্বিতীয় সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মারা যান তখন তাঁর পরিবারের কেউ তাঁকে একথাটা জানাবার প্রয়োজনটুকু বোধ করেননি ।
মার অসুখ শুনে বাড়ি ফিরে আসার পর এবং অসুস্থ মাকে দেখবার পর রাতের খাওয়া শেষ করে যখন তিনি ভাইয়ের কাছে নিজের স্ত্রীর খবর চান তখন সে খুব স্বাভাবিকভাবে বলে যে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার রাতে বৌদি মারা গেছেন ।
বইটিতে সেসময়ের সভাসমিতি আর শিল্পীমহলের কথাও বড়ভাবে আছে । প্রমোদকুমার নিজেও আর্টকলেজে ভর্তি হয়েছিলেন আঁকা শিখবেন বলে । ফলে তখনকার শিল্পজগতের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্টতা পুরোভাবে ছিল । সেই সময়ের শিল্পীমহলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, এবং অন্তসারশূন্যতা তাঁর লেখায় বারে বারে উঠে এসেছে ।
বঙ্গভঙ্গের আগে বিভিন্ন সভাসমিতিতে লেখক উপস্থিত থাকতেন এবং বহু জ্ঞানীগুনী মানুষের বক্তৃতা শোনার সৌভাগ্য তাঁর হয়েছিল । যাঁদের মধ্যে আছেন রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু প্রভৃতি ।
প্রমোদকুমারের বাবা বদরাগী রাজেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ওরফে রাজেন বিখ্যাত নাট্যকার গিরিশ ঘোষ এবং বিখ্যাত অভিনেত্রী তিনকড়ি দাসী ওরফে নটী বিনোদিনীকে কিভাবে একটি বাগানবাড়িতে সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন তার রোমহর্ষক বর্ণনা এই বইতে রয়েছে ।
পুরনো দিনের কথা পড়তে আমার সবসময়েই ভাল লাগে । তাই এইবইটিও আমি কয়েকদিনের মধ্যেই পড়ে ফেলেছি । বইটা পড়তে পড়তে আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন একটা টাইমমেশিনে চেপে চলে গেছি একশো বছর আগে ।
বইটি পড়ে তখনকার রীতিনীতি সম্পর্কে যে সাধারন ধারনাগুলি পেলাম সেগুলো হল –
১. অল্পবয়েসে বিবাহ দেওয়া একটা প্রচলিত নীতি । মেয়েদের মোটামুটি তেরো চোদ্দ বছর আর ছেলেদের সতেরো থেকে একুশ বছরের মধ্যেই বিবাহ দেওয়া হত ।
২. সংসারে কোনো কন্যা সন্তান হওয়াকে মোটেও সাদরে গ্রহন করা হত না । আবার যদি সেই সন্তান প্রথম হয় । তবে কন্যা সন্তানের যে কোন আদর যত্ন হত না এমন নয় । অনেক বাড়িতেই আদুরে কন্যার দেখা মিলত । আবার এই লেখক মোটামুটি বিত্তশালী পরিবারের নাতি এবং বাবা মার প্রথম সন্তান হয়েও আদর যত্ন বিশেষ পাননি ।
৩. খুব শিক্ষিত উদার পরিবার ছাড়া মেয়েরা সাধারনত লেখাপড়া শিখত না । যদি বা শিখত তাও প্রাথমিক পাঠ অবধি ।
৪. বিবাহে পণ নেওয়া একেবারে সাধারন রীতিনীতির মধ্যে পড়ত । এ সম্পর্কে কোন অপরাধ বোধ ছিল না । অনেক সময় টাকাপয়সার জরুরি প্রয়োজন হলে ছেলের বিয়ে দেওয়া হত ।
৫. বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীরা পরস্পরকে প্রেমপত্র লিখত । এবং তাতে বঙ্কিমী ভাষায় প্রাণনাথ প্রাণবল্লভ প্রভৃতি সম্ভাষনের ছড়াছড়ি থাকত ।
একশো বছরে কলকাতা কতটা পালটে গেছে তা ভাবলেও আশ্চর্য হতে হয় । কলকাতা শহরের যে রাস্তাগুলোর উপর দিয়ে আমরা এখন হেঁটে বেড়াই সেই একই রাস্তার উপর দিয়ে লেখক চলে ফিরে বেড়িয়েছেন তাঁর জীবদ্দশায় ।
কিন্তু কিছুই আর আগের মত নেই । ভারত এখন স্বাধীন । কলকাতা শহরের রাস্তায় এখন ঘোড়ায় টানা ট্রাম চলে না । মটোরগাড়িতে ভর্তি এখন শহর । মাটির তলা দিয়ে ছুটেছে মেট্রো রেল । পরাধীন দেশের সেই আদর্শবাদীতা আর নেই, সবাই সবাইকে কিনতে এখন অভ্যস্ত । এসেছে ঝকঝকে মল, স্টার, মিনার্ভার জায়গায় এখন এসেছে মাল্টিপ্লেক্স । ইন্টারনেট আর মোবাইলে অভ্যস্ত ঝকঝকে যুবক যুবতীরা এখন ঘুরে বেড়ায় শহরে । একান্নবর্তী পরিবার এখন অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজতে হয় ।
জানি যুগের সাথে সাথে সব কিছুই পাল্টায় । কিন্তু তবুও মাত্র একশো বছর আগেও আমরা এতটাই অন্যরকম ছিলাম । প্রাণকুমারের স্মৃতিচারণ পড়ে তাই খুবই আশ্চর্য হই । কিছুতেই ঝেড়ে ফেলতে পারি না সেই মুখগুলোকে যারা একসময় বাস করত এই কলকাতা শহরেই ।