Saturday, March 24, 2007

সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম এবং ভূমি অধিগ্রহন বিরোধী কিছু ওয়েবসাইট

হু হা ইন্ডিয়া হেরে মোলো ইন্ডিয়া

হু হা ইন্ডিয়া হেরে মোলো ইন্ডিয়া

আমাদের রথী মহারথীরা বিশ্বকাপ জিততে গিয়ে শেষে ঘুঁটের মালা গলায় দেশে ফিরছেন । বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার কাছে ন্যাজে গোবরে হয়ে ওনারা দেশে ফিরে কটা বিজ্ঞাপনের অফার পান সেটাই দেখার ।
ফিরে আসার পর নতুন স্লোগান শুনতে হবে........
হু হা ইন্ডিয়া হেরে মোলো ইন্ডিয়া ।

আর ইয়ে চ্যাপেলদার কি হবে । ভারতে কি আর ফিরে আসবে .... দেখাই যাক ।

Saturday, March 17, 2007

নন্দীগ্রাম নিয়ে আর কিই বা লেখার থাকতে পারে ।



নন্দীগ্রাম নিয়ে কি লিখব । লেখার আর কি বা থাকতে পারে । এই ব্লগে লিখে আর কি বা হবে, যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের তো আর ফিরিয়ে আনা যাবে না ।

দেশের উন্নতি শিল্পায়ন কাদের জন্য, কিসের জন্য মানুষের ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করে তাদের কে ঠান্ডা মাথায় খুন করে এই শিল্পায়ন কাদের স্বার্থে । প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু একবার বিজেপি সরকারকে বলেছিলেন অসভ্য বর্বর । এখন আমাদের বামফ্রন্ট সরকারকে তিনি কি বলেন তা জানতে ইচ্ছা করছে ।

আমার মনে হয় অসভ্য বর্বরতার চরম পর্যায়ে পৌছে যাওয়া এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার আর কোনো অধিকার নেই তা যতই ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসুক না কেন । মনে রাখতে হবে হিটলার নরেন্দ্র মোদী জর্জ বুশ এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্ষ সবাই বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন । আমার চোখে তো এখন এখন এদের মধ্যে কোন পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি না । খালি এদের বর্বরতার মাপটা আলাদা ।

আমার মনে হয় যে সিপিএম নেতারা এই গণহত্যার প্ল্যান করেছিলেন তাঁরা কি করে রাত্রে ঘুমোতে যাবেন ।

শিক্ষিত প্রাজ্ঞ ভদ্র বুদ্ধদেবের সাদা পোশাকের পিছনে কি ভয়াবহ একজন রাক্ষস লুকিয়ে আছে তা ভেবেও কষ্ট হচ্ছে ।

আজকে ফ্রন্টের বৈঠকে বুদ্ধদেব স্বীকার করছেন যে এই ঘটনার জন্য দায়ী তিনি । তিনিই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পুলিশ পাঠানোর । তাতে আবার বামফ্রন্টের শরিকরা বলছেন তাঁরা বুদ্ধদেবের সত্যবাদীতায় এবং সাহসে খুশি ।

আশ্চর্যের ব্যাপার এতে খুশি হবার কি আছে ! কেউ যদি একটা খুন করে গলা ফাটিয়ে বলে যে আমি খুন করেছি তাহলে কি আমরা তার সত্যবাদীতায় খুশি হয়ে বলব দেখ লোকটা কি সত্যবাদী আর সাহসী ।

আমার সরাসরি বক্তব্য হল এই যে যদি বুদ্ধদেব নন্দীগ্রামের গণহত্যার জন্য দায়ী বলে নিজেই স্বীকার করে থাকেন তাহলে কেন তাঁকে গ্রেপ্তার করে কাঠগড়ায় তোলা হবে না । কেন তাঁর বিচার হবে না । কেন তিনি এখনও মুখ্যমন্ত্রীর পদ আঁকড়ে থাকবেন । আমরা তো কোন খুনি অপরাধীকে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলে দেখতে চাই না ।

সিবিআই তদন্ত হচ্ছে । কিন্তু তাতে কিছুই প্রমান হবে না । আরও পাঁচজন অপরাধী রাজনীতিকের মত বুদ্ধদেবও আইনের হাতকে সহজেই ফাঁকি দেবেন ।

তাই এখন থেকে সুরুচিবান ভদ্র অমায়িক সংস্কৃতিবান প্রভৃতি বিশেষণের সাথে সাথে বুদ্ধদেবের আগে আরো একটা বিশেষণ যোগ হবে ।

সেটা হল খুনি

Tuesday, March 13, 2007

অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট -- দেখার মত একটি ছবি


অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট ( All Quiet on the Western Front) সিনেমাটি দেখবার আগে জানতাম না যে এটা এত পুরনো একটা ছবি । আমার জানা ছিল যে সিনেমাটি যুদ্ধের উপর কিন্তু সেটা যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বানানো সেটা জানা ছিল না ।

আমার বরাবরই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে আগ্রহ রয়েছে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিশাল পৃথিবীব্যাপী লড়াই নারকীয়তা এবং বিশালতার কাছে হয়ত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ একটু আড়ালে চলে গেছে । কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধেরও নারকীয়তা কিছুটা কম ছিল না । শিল্পবিপ্লবের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি ছিল এই যুদ্ধ ।

এই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একজন জার্মান সৈনিক ছিলেন এরিখ মারিয়া রেমার্ক। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি ১৯২৯ সালে রচনা করেন বিখ্যাত উপন্যাস অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট

১৯৩০ সালে লিউইস মাইলস্টোনের পরিচালনায় তৈরি হয় একই নামে এই ছবি যা জিতে নেয় সেরা সিনেমার অস্কার পুরস্কার ।

সিনেমাটির শুরুতে দেখা যায় যে এক অধ্যাপক জ্বালাময়ী বক্তৃতার সাহায্যে তার ছাত্রদের উৎসাহ দিচ্ছে সেনাবাহিনীতে যোগদান করার জন্য এবং দেশের জন্য কিছু করার জন্য । ফলে ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং সমস্ত খাতা বই সব ছিঁড়ে সেনাবাহিনীতে নাম লেখায় ।

কিন্তু যুদ্ধে গিয়ে তারা যখন মৃত্যুর মুখোমুখি হয়, ট্রেঞ্চের ভিতরে দিনের পর দিন লুকিয়ে থাকে এবং তাদের মধ্যে একে একে অনেকেরই মৃত্যু হয় তখন তারা বুঝতে পারে যে যুদ্ধের ভিতরে কোন দেশপ্রেমের রোমান্টিকতা নেই বরং রয়েছে এক প্রচন্ড নারকীয়তা । দিনের পর দিন খাদ্যাভাবে জলাভাবে মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে করতে তারা বুঝতে পারে যে তারা আসলে রাষ্ট্রনায়কদের হাতের পুতুল তাদের খালি ঠেলে দেওয়া হয়েছে মরবার জন্য । যুদ্ধে শহীদ হবার মধ্যে কোন রকমের গৌরব নেই ।

আর সিনেমার শেষ হওয়া অবধি তারা প্রত্যেকেই একে একে মারা যায় ।

সিনেমাটি আজ থেকে প্রায় সাতাত্তর বছর আগে তৈরি হলেও যুদ্ধের দৃশ্যগুলি খুব সুন্দর ভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে । আমি ডিসকভারি আর ন্যাশন্যাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে আসল যুদ্ধের যে সব ফুটেজ দেখেছি তার সাথে অনেকটাই মেলে । এমন কি স্টিভেন স্পিলবার্গ সেভিং প্রাইভেট রায়ান সিনেমা বানানোর উৎসাহ পেয়েছিলেন এই সিনেমাটি দেখে ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে প্রচুর বিখ্যাত সিনেমা হয়েছে । কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে ভাল সিনেমা বোধহয় খুব একটা বেশি নেই । আর যারা যুদ্ধের সিনেমা দেখতে পছন্দ করেন এবং ক্লাসিক সিনেমা দেখেন তাঁদের অবশ্যই দেখতে হবে এই ছবি ।



Sunday, March 11, 2007

চাকরি ছাড়ার ইতিবৃত্ত

কিছু কিছু অফিসে পরিস্থিতি হচ্ছে এরকম যে দলে দলে কর্মীরা আসছে আর যাচ্ছে । অর্থাৎ কর্মীদের চাকরি ছেড়ে দেবার হার প্রচুর । অনেক সময়ে মাত্র তিনমাসের ব্যবধানে দেখা যায় অফিসে সব নতুন মুখ । অফিসের চেহারাই যেন পালটে গেছে । আবার তিনমাস পরে গেলেই দেখা যায় যে আবার বহুলোক ছেড়ে দিয়েছে এবং অন্যরা যোগ দিয়েছে ।

কিন্তু বেসরকারী চাকরিতে ছেড়ে দেবার এত বেশী হার কেন । ম্যানেজমেন্ট অনেক সময়েই দোষ চাপায় কর্মীদের উপরে । তাদের বক্তব্য হচ্ছে যে সামান্য কিছু টাকা বেশি পাবার লোভে কর্মীরা চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছে । কিন্তু আমার মনে হয় ব্যাপারটা এত সহজ সরল নয় । বেশিরভাগ কর্মীই শুধুমাত্র কিছু টাকা বেশি পাবে বলে চাকরি বদলায় না । চাকরি বদলানোর পিছনে বেশ কিছু অন্য কারনও কাজ করে ।

আমি গত প্রায় আড়াই বছর ধরে কলকাতায় বেসরকারি চাকরি করছি । বর্তমানে আমি আমার পঞ্চম চাকরি করছি । কোনও অফিসে আমার সর্বাধিক থাকার রেকর্ড হল মাত্র নয় মাস । এরকম ব্যাপার শুধু আমার ক্ষেত্রে নয় আরও বহু জনের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে । কোন অফিসে কেউ যদি দুই বছর কাটায় তাহলেই সবাই অবাক হয়ে যায় যে কি করে সে দুই বছর একই কম্পানিতে কাটিয়ে দিল । মোটামুটি ভাবে চাকরি ছাড়ার পিছনে কারনগুলো যদি খোঁজার চেষ্টা করি তাহলে সেগুলো দাঁড়াবে এরকম --

১. ইন্টারভিউয়ের সময়ে ম্যানেজমেন্ট যা বলে পরে দেখা যায় সেগুলো অনেক কিছুই মিলছে না । যেমন বলা হল আমাদের অফিস সন্ধ্যে ছটায় ছুটি । কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই দেখা গেল যে ছুটির টাইমটা আসলে সাতটা ছাড়িয়ে আটটা সাড়ে আটটায় গিয়ে পৌঁছচ্ছে । কিংবা ইন্টারভিউয়ের সময়ে বলা হয়েছিল আপনাকে এই ধরনের কাজ করতে হবে । কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল তার বাইরেও আরো অনেক ধরনের কাজ দেওয়া হতে লাগল যেটা তার করার কথা ছিল না । অর্থাৎ স্পষ্টই বোঝা গেল যে ইন্টারভিউয়ের সময়ে ম্যানেজমেন্ট তথ্য গোপন করেছিল ।

২. উৎসাহের অভাব চাকরি ছাড়ার ক্ষেত্রে একটা প্রধান কারন বলে মনে হয় । অর্থাৎ কারও কর্মকুশলতার অভাব হলে ম্যানেজমেন্ট স্টেপ নেবে কিন্তু কেউ যদি ভালো কাজ করে তবে তার জন্য কোন ধন্যবাদ বা উৎসাহ দেবে না । ভাব খানা হল এই যে মাইনে দিচ্ছি এই ঢের আবার ধন্যবাদ দিতে হবে নাকি ।

৩. কাজের পরিকল্পনার অভাব যার ফল ভুগতে হয় কর্মীদের । অর্থাৎ ম্যানেজমেন্ট কাজ ধরেই খালাস । কিন্তু সেই কাজটা কিভাবে সুষ্ঠুভাবে করা যেতে পারে সে বিষয়ে কোন চিন্তাভাবনা নেই । ফলে তিন দিনের কাজ শেষ হতে লাগছে আটদিন আর দায় গিয়ে পড়ছে কর্মীদের উপর ।

৪. ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কর্মীদের যোগাযোগের অভাব । যার ফলে কর্মীরা বুঝতে পারছে না তাদের সঠিক দায়িত্বটা কি । আর ম্যানেজমেন্ট বুঝতে পারছে না যে কর্মীদের কাজ করতে কি সমস্যা হচ্ছে ।

৫. পরিকাঠামোর অভাব । কর্মীদের কাজ করার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই অথচ তাদের বলা হচ্ছে ঠিক সময়ে সঠিক ভাবে কাজ শেষ করতে । অর্থাৎ ঢাল নেই তরোয়াল নেই নিধিরাম সর্দার ।

৬. ম্যানেজমেন্টের জ্ঞান এবং দক্ষতার অভাব । অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে অফিসে যে ধরনের কাজ হয় সে ব্যাপারে অফিসের মালিকপক্ষ বা ম্যানেজমেন্টের কোন জ্ঞান নেই । তার শুধু টাকা ইনভেস্ট করেই খালাস । ফলে কোন কাজে কোন সমস্যা দেখা দিলে তাদের সেই সমস্যা বোঝার দক্ষতা বা ধৈর্য কোনটাই নেই । তাদের খালি টাকায় ইন্টারেস্ট ।

৭. কোন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই । অর্থাৎ অফিস যেমন চলছে চলুক । এর থেকে আর বেশি বাড়াব না । যেরকম কাজ করছি সেই রকম কাজই করে যাব, নতুন কোন কাজের চেষ্টা করব না । কর্মীদের যদি অন্যান্য কাজে দক্ষতাও থাকে তাহলেও সেই দক্ষতাকে কাজে লাগাব না ।

৮. খারাপ ব্যবহার । এটা করে অফিসের ম্যানেজমেন্ট নিজেরাই নিজেদের সর্বনাশ করে । কর্মীরা সেই অবস্থায় কিছু না বললেও পরে এর শোধ ঠিকই নেয় । চাকরি ছাড়ে ঠিক মোক্ষম সময়ে । যার ফলে কোন প্রজেক্ট ডুবে যায় এবং মালিকপক্ষের সাড়ে সর্বনাশ হয় ।

৯. অবাস্তব টার্গেট বা ডেডলাইন দেওয়া । অনেক সময়েই ম্যানেজমেন্ট জেনেশুনেই কর্মীদের উপরে অবাস্তব টার্গেট বা ডেডলাইন চাপিয়ে দেয় । এবং এব্যাপারে তারা কর্মীদের সাথে কোন আলোচনাও করে না ।

১০. মাইনে বাড়ানোর কোনো ইচ্ছা না থাকা । ম্যানেজমেন্ট মৌখিকভাবে কর্মীদের কাজের খুব প্রশংসা করে কিন্তু মাইনে বাড়ানোর কথা উঠলেই চুপচাপ হয়ে যায় । কর্মীদের এই শুকনো প্রশংসায় যে মন ভরবে না সেটাই তো স্বাভাবিক ।

কোন ভুলভাল অফিসে ম্যানেজমেন্টের ব্যবহার কিরকম হয় তা নিজের দেখা একটা ঘটনা বলি ।

একটা অফিসে আমি গ্রাফিক ডিজাইনার হিসাবে কাজ করতাম । সেখানে একজন প্রজেক্ট ম্যানেজারের আন্ডারে দুজন প্রোগ্রামার কাজ করত । আমরা একই ঘরে বসতাম । সেই ম্যানেজার একজন প্রোগ্রামারকে জিজ্ঞাসা করল কিরে তোর কাজ হল ? ছেলেটি বলল না এখনও হয়নি । কি এখনও হয়নি ! খেঁকিয়ে উঠল ম্যানেজার । আর কবে হবে ?

খানিকক্ষন বাদে প্রজেক্ট ম্যানেজার আবার জিজ্ঞাসা করল কিরে হল ? এবার ছেলেটি বলল হ্যাঁ হয়ে গেছে । প্রজেক্ট ম্যানেজার এবারও খেঁকিয়ে উঠল । সেকি ! হয়ে গেছে ! তবে এখনও চুপ করে বসে আছিস কেন ?

ছেলেটি কয়েকদিন বাদে থেকেই অফিসে আসা বন্ধ করল । এবং বহু চেষ্টা করেও সেই প্রজেক্ট ম্যানেজার তার সাথে আর যোগাযোগ করতে পারল না ।

তবে চাকরি ছাড়ার ক্ষেত্রে সব দোষই যে ম্যানজমেন্টের এমন আমি মনে করি না । অনেক ক্ষেত্রে কর্মীদেরও দায়িত্ব থাকে । শুধুমাত্র ভাল লাগছে না বলে চাকরি ছেড়ে দিতেও আমি দেখেছি ।

তবে কর্মীদের দায়িত্ব থাকে যেমন কম্পানিকে স্যাটিসফাই করা তেমনি কম্পানিরও দায়িত্ব কর্মীদের চাহিদা মেটানো । যদি কোন কর্মী মনে করে যে তার কম্পানি তাকে তার যোগ্যতা অনুযায়ী মাইনে দিচ্ছে না তবে সে তো অন্য কোন জায়গায় জয়েন করতেই পারে । এর মধ্যে তো দোষের কিছু নেই । তবে তার নির্দিষ্ট সময়ের নোটিশ দিয়ে তবেই ছাড়া উচিত । যাতে কোন পক্ষেরই কোনো অসুবিধা না হয় ।

আমার মাত্র আড়াই বছরের অভিজ্ঞতার উপরে আমি এই লেখা লিখলাম । হয়ত সময়ের সাথে সাথে আমার দৃষ্টিভঙ্গিও কিছুটা পালটাতে পারে । আর সব সংস্থায় যে এরকম অবস্থা তা মনে করার কোন কারন নেই । অনেক অফিসেই সুন্দর ব্যবস্থা নীতি এবং পরিকল্পনা থাকে । কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমার কেরিয়ারের শুরুর সংস্থাগুলোতে আমাকে এই রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল ।

Wednesday, March 07, 2007

স্যার কালচার

অনেক অফিসেই দেখা যায় যে একটা ছোট ঘরে অন্য সবার থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হুমদো মুখে একজন বসে থাকে তাকে সবাই স্যার স্যার করে ।

কলকাতায় এই স্যার কালচারটা বেশ প্রবল । অফিসে বসকে সবাই স্যার বলেই ডাকে । আর অনেক উল্লুক এইভাবে স্যার স্যার ডাকাটাকে বেশ পছন্দও করে । যেন স্যার কি যেন একটা বিশাল সম্মানের ডাক ।

আমি কখনই কাউকে স্যার বলে ডাকাটা পছন্দ করি না । আসলে স্কুলের মাস্টারমশাইদের ছাড়া কাউকেই আমার স্যার বলতে ইচ্ছা করে না । তবুও চাকরিতে জয়েন করার পরে যখন দেখি যে সবাই বসকে স্যার স্যার করছে তখন বাধ্য হয়ে আমাকেও করতে হয় । তবে আমার চাকরি জীবনে সব বসকেই যে স্যার স্যার করতে হয়েছে এমন নয় । দুটি অফিসে আমরা বসকে অমুকদা তমুকদা সম্বোধনেও ডাকতাম । যেটা আমার মতে খুবই ভালো ।

অফিসের বাইরে লোকে দুঅবস্থাতে স্যার স্যার করে । যখন তারা বিনা টিকিটে চেকারের হাতে ধরা পড়ে অথবা কোন কারনে পুলিশের হাতে পড়ে । আবার অনেক স্কুলের ক্লার্ক খুব অসন্তুষ্ট হয় যদি ছাত্ররা তাকে স্যার বলে না ডাকে ।

তবে স্যার বলে আমাকেও কেউ ডেকেছে এমনও হয়েছে । কলকাতার রাস্তায় কিছু ভিখিরি পাওয়া যায় যারা স্যার স্যার বলে আলাপ ফাঁদে তারপর আসল কথায় আসে । স্যার একটা কথা ছিল । আমি বলি কি কথা ? সে তখন ইনিয়ে বিনিয়ে আসল কথায় আসে যে সে টাকা চায় কারন সে খুব বিপদে পড়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি ।

আমি অল্প কিছুদিন একটা কম্পিউটার সেন্টারে ফ্যাকাল্টির কাজ করেছিলাম তখন সেখানে ছাত্রছাত্রীরা আমাকে স্যার স্যার বলেই ডাকত । তবে সেটা শুনতে আমার কখনই ভালো লাগত না ।

আমার একটা প্রস্তাব আছে । এই স্যার কথাটাকে কি আমাদের কর্মজীবন থেকে একেবারেই বাদ দেওয়া যায় । এটা শুধুমাত্র আমাদের ছাত্রজীবনেই সীমাবদ্ধ থাকুক না ।