স্যার কালচার
অনেক অফিসেই দেখা যায় যে একটা ছোট ঘরে অন্য সবার থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হুমদো মুখে একজন বসে থাকে তাকে সবাই স্যার স্যার করে ।
কলকাতায় এই স্যার কালচারটা বেশ প্রবল । অফিসে বসকে সবাই স্যার বলেই ডাকে । আর অনেক উল্লুক এইভাবে স্যার স্যার ডাকাটাকে বেশ পছন্দও করে । যেন স্যার কি যেন একটা বিশাল সম্মানের ডাক ।
আমি কখনই কাউকে স্যার বলে ডাকাটা পছন্দ করি না । আসলে স্কুলের মাস্টারমশাইদের ছাড়া কাউকেই আমার স্যার বলতে ইচ্ছা করে না । তবুও চাকরিতে জয়েন করার পরে যখন দেখি যে সবাই বসকে স্যার স্যার করছে তখন বাধ্য হয়ে আমাকেও করতে হয় । তবে আমার চাকরি জীবনে সব বসকেই যে স্যার স্যার করতে হয়েছে এমন নয় । দুটি অফিসে আমরা বসকে অমুকদা তমুকদা সম্বোধনেও ডাকতাম । যেটা আমার মতে খুবই ভালো ।
অফিসের বাইরে লোকে দুঅবস্থাতে স্যার স্যার করে । যখন তারা বিনা টিকিটে চেকারের হাতে ধরা পড়ে অথবা কোন কারনে পুলিশের হাতে পড়ে । আবার অনেক স্কুলের ক্লার্ক খুব অসন্তুষ্ট হয় যদি ছাত্ররা তাকে স্যার বলে না ডাকে ।
তবে স্যার বলে আমাকেও কেউ ডেকেছে এমনও হয়েছে । কলকাতার রাস্তায় কিছু ভিখিরি পাওয়া যায় যারা স্যার স্যার বলে আলাপ ফাঁদে তারপর আসল কথায় আসে । স্যার একটা কথা ছিল । আমি বলি কি কথা ? সে তখন ইনিয়ে বিনিয়ে আসল কথায় আসে যে সে টাকা চায় কারন সে খুব বিপদে পড়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি ।
আমি অল্প কিছুদিন একটা কম্পিউটার সেন্টারে ফ্যাকাল্টির কাজ করেছিলাম তখন সেখানে ছাত্রছাত্রীরা আমাকে স্যার স্যার বলেই ডাকত । তবে সেটা শুনতে আমার কখনই ভালো লাগত না ।
আমার একটা প্রস্তাব আছে । এই স্যার কথাটাকে কি আমাদের কর্মজীবন থেকে একেবারেই বাদ দেওয়া যায় । এটা শুধুমাত্র আমাদের ছাত্রজীবনেই সীমাবদ্ধ থাকুক না ।
No comments:
Post a Comment