Sunday, January 28, 2007

পুরনো কলকাতার ছবি

আমার বরাবরই খুব ইচ্ছে করে পুরনো দিনের কলকাতা কেমন ছিল তা জানতে । বিশেষ করে পুরনো কলকাতার ফটোগ্রাফ সংগ্রহ করতে করতে আমার দারুন লাগে । কিন্তু ইন্টারনেটে পুরনো কলকাতার ছবি বিশেষ পাওয়া যায় না । যা পাওয়া যায় তা আবার খুব ছোট সাইজের ।

হঠাৎই Flickr.com ঘাঁটতে ঘাঁটতে পেয়ে গেলাম পুরনো কলকাতার ছবির একটি বড় গ্যালারি। মোট ৬০ টি ছবি আছে এখানে । ছবিগুলো তোলা হয়েছে ১৯৪৫-৪৬ সাল নাগাদ । ছবিগুলো হলুদ হয়ে গেলেও ছেঁড়া ফাটা নয় । এবং মোটামুটি বড় সাইজের ।

গ্যালারির ঠিকানা -- http://flickr.com/photos/udayms/sets/72157594177409787/


ছবিগুলির উৎস সম্পর্কে যা দেওয়া আছে তা হল

The South Asia Section of the Van Pelt Library, University of Pennsylvania recently acquired from a bookdealer a photograph album consisting of 60 photographs of Calcutta taken most likely between 1945-1946. The photographer, Mr. Claude Waddell, also provided the interesting glosses accompanying each photograph. Several attested copies of this work has emerged including one with a 'title page' held by the Southeastern Louisiana University in Hammond, Louisiana. Mr. Waddell was a military photographer. Many of his captions sound like annotations that would be found in a typical military magazine.The album begins with several general long shots of Calcutta and ends with a picture of A mysterydhobi-s (washermen) washing clothes. The text accompanying the last photograph also sounds as if the author intended to finish with that picture of one of the "great mysteries of India.". The annotations have been included because of their intrinsic interest not only to the photographs but to a 'typical' American impression of India at this time.

Saturday, January 27, 2007

বাংলাদেশে ব্লগের উপর নিয়ন্ত্রন আরোপের প্রতিবাদ জানাই



বাংলাদেশের বিখ্যাত ব্লগিং সাইট সামহোয়্যারইন (http://www.somewhereinblog.net/) ব্লগ খুললেই ভেসে উঠছে :-


the government has requested through emergency power rules that no news against the government shall be published in any media. Until proper moderations is in place the somewhereinblog will not display any new posting on frontpage but in personal blogs. The full responsibility for any post lies with the blogger. In case of request from high-authority we will be bound to provide all informations of any blogger violating the rules. you can still log into your personal blog and maintain that according to this rule.

অবশেষে পাকিস্তান এবং ভারতের পর বাংলাদেশও ব্লগের উপর নিয়ন্ত্রন আরোপ করে বুঝিয়ে দিল যে তারাও বাকস্বাধীনতার শত্রু । আসুন আমরা সবাই সামহোয়্যারইনে তো বটেই যাদের অন্য জায়গায় ব্লগ আছে সেখানেও প্রতিবাদ করে পোস্ট দিই । তাহলে এই ব্লকের খবর সারা পৃথিবীর কাছে পৌছতে পারবে ।

বাংলাদেশ সরকারের এই ঘৃণ্য সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মুখরিত হোক গোটা বিশ্ব ।

Saturday, January 13, 2007

মিডিয়া প্লেয়ার ক্লাসিক এবং কে লাইট মেগা কোডেক প্যাক

আচ্ছা এরকম হলে ভাল হত না যে কম্পিউটারে একটি প্লেয়ারেই যদি সব রকমের ফরম্যাট চালানো যেত । অর্থাৎ এমন একটা প্লেয়ার যাতে ডিভিডি, ভিসিডি, অডিও সিডি, এমপিইজি ১,২ ও ৪, কুইক টাইম, রিয়েল ভিডিও, ডিআইভিএক্স, এক্সভিআইডি, এমপিথ্রি, এভিআই বিভিন্ন কোডেক কমপ্রেসন সহ চালানো যাবে। তাহলে আর আলাদা আলাদা ফরম্যাটের জন্য আলাদা আলাদা প্লেয়ার ইনস্টল করতে হবে না ।

এই সুবিধা পেতে গেলে আপনার কম্পিউটারে ইনস্টল করতে হবে কে লাইট মেগা কোডেক প্যাক । এটি আপনি ফ্রিতে ডাউনলোড করতে পারবেন এই ঠিকানায় ।

http://www.free-codecs.com/K_Lite_Mega_Codec_Pack_download.htm

এই ডাউনলোডটির সাইজ হল তিরিশ এমবি মত । এর ভিতরেই দেওয়া আছে মিডিয়া প্লেয়ার ক্লাসিক এবং সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কোডেক গুলো। মিডিয়া প্লেয়ার ক্লাসিক দেখতে একেবারে উইনডোজ মিডিয়া প্লেয়ার ৬.৪ এর মত । কিন্তু আসলে উইনডোজ মিডিয়া প্লেয়ারের মত দেখতে হলেও এটি আসলে একেবার অন্য একটি সফটওয়্যার । উইনডোজ মিডিয়া প্লেয়ারের সাথে মিডিয়া প্লেয়ার ক্লাসিকের কোনো সম্পর্ক নেই ।

এই প্যাকেজটি ইনস্টল করলে আলাদা করে আর রিয়েল প্লেয়ার এবং কুইক টাইম প্লেয়ার ইনস্টল করার প্রয়োজন নেই ।

Wednesday, January 10, 2007

জেমস বন্ডের ছবি ৩

সাধারন ভাবে জেমস বন্ডের সমস্ত সিনেমাই আরম্ভ হয় জেমস বন্ডের হেঁটে আসা এবং ক্যামেরার দিকে একটি গুলি ছোঁড়ার দৃশ্যের ভিতর দিয়ে । তারপর জেমস বন্ডের একটি অ্যাকশন দৃশ্য দেখানো হয় । অ্যাকশন দৃশ্যটির পরে সিনেমার টাইটেল আসে । প্রথম সিনেমা ড. নো তে অবশ্য কোন স্টার্টিং অ্যাকশন দৃশ্য ছিল না । টাইটেলের আগের এই অ্যাকশন দৃশ্যটা প্রায় যেকোন বন্ড সিনেমারই প্রধান আকর্ষনের বিষয় । এই দৃশ্যে বন্ড কোন এক কঠিন সমস্যার সমাধান করে প্রায় মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে ।

মুনরেকার সিনেমার প্রিটাইটেল সিকোয়েন্সে দেখা গিয়েছিল বন্ডকে প্যারাসুট ছাড়াই প্লেন থেকে ফেলে দেওয়া হয় তারপর বন্ড আকাশেই ভাসতে ভাসতে এক ভিলেনকে আক্রমন করে তার কাছ থেকে প্যারাসুট কেড়ে নিয়ে নিচে নেমে আসে । গোল্ডেন আই এবং লিভিং ডেলাইট সিনেমাতেও প্রায় একই রকম ব্যাপার ছিল । গোল্ডেন আইতে বন্ড খাদে ঝাঁপ দেয় এবং সেই খাদে পতনরত একটি পাইলট বিহীন প্লেনের ভিতর ঢুকে প্লেন চালিয়ে পালায়। লিভিং ডেলাইট সিনেমায় বন্ড একটি খাদে পতনরত জিপের ভিতর ভিলেনের সঙ্গে মারামারি করতে থাকে তারপর একসময় বন্ড প্যারাসুট নিয়ে জিপের বাইরে বেরিয়ে আসে ।

ডাই অ্যানাদার ডে সিনেমার প্রিটাইটেল সিকোয়েন্স একটু অন্যরকম । এখানে বন্ড শেষ পর্যন্ত পালাতে পারে না এবং উত্তর কোরিয়ার মিলিটারির হাতে ধরা পড়ে যায় এবং বন্দী অবস্থায় এক বছরেরও বেশী সময় কাটায় । আবার লিভ অ্যান্ড লেট ডাই সিনেমার প্রিটাইটেল সিকোয়েন্সে বন্ডকে দেখানোই হয়নি । ফর ইওর আইজ ওনলি সিনেমাতে দেখানো হয়েছিল ভিলেন বন্ডকে একটি রিমোট কন্ট্রোল চালিত হেলিকপ্টারে বন্দী করে মারবার ছক করে । কিন্তু বন্ড শেষ অবধি বেঁচে যায় এবং ভিলেনকে হত্যা করে । ইউ ওনলি লিভ টোয়াইস সিনেমার শুরুতেই দেখান হয়েছিল যে বন্ড কিছু আততায়ীর হাতে খুন হল । কিন্তু পুরো ব্যাপারটাই ছিল সাজানো । বন্ডকে মৃত সাজিয়ে বিপক্ষের চোখে ধুলো দেবার জন্যেই পুরো প্ল্যানটা ছকা হয়েছিল ।

প্রিটাইটেল সিকোয়েন্সগুলির মধ্যে আমার সবথেকে প্রিয় দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ নট এনাফ সিনেমার প্রায় চোদ্দ মিনিটের সিকোয়েন্স । এখানে লন্ডনের টেমস নদীতে বোটে চেপে লোমহর্ষক ভাবে বন্ড এক মেয়ে ভিলেনের পিছু নেয় । একসময় জলের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময়েও বন্ডকে দেখা যায় টাই ঠিক করতে । ইংরাজি সিনেমায় আমার দেখা সেরা চেজিং দৃশ্যগুলির মধ্যে এটি অন্যতম ।

প্রিটাইটেল সিকোয়েন্সের পরে আসে বন্ড সিনেমার টাইটেল । বন্ডের প্রত্যেক টাইটেলেই নগ্ন নারীশরীর দিয়ে নানা রকমের অ্যানিমেশন কোলাজ দেখান হয় । নগ্ন নারীশরীরের এরকম শিল্পসম্মত ব্যবহার খুব কমই দেখা যায় । সেই সাথে থাকে বিখ্যাত শিল্পীদের গাওয়া গান । বন্ড সিনেমার টাইটেল মিউজিকের জন্য অনেকেই কন্ঠ দিয়েছেন । যেমন পল ম্যাককার্টনি, শেরিল ক্রো, ম্যাডোনা প্রভৃতি ।

আমার সবথেকে প্রিয় বন্ড টাইটেল হল গোল্ডেন আই সিনেমার টাইটেল। এই সিনেমার টাইটেলে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন কে সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছিল ।

Tuesday, January 09, 2007

জেমস বন্ডের ছবি ২

জেমস বন্ডের ভূমিকায় প্রথম সিনেমায় অভিনয় করেন শন কোনারি । প্রথম সিনেমা ছিল ড. নো (১৯৬২) । শন কোনারি ড. নো ছাড়াও আরও ছয়টি সিনেমাতে জেমস বন্ডের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন । সেগুলো হল ফ্রম রাশিয়া উইথ লাভ (১৯৬৩), গোল্ডফিঙ্গার (১৯৬৪), থান্ডারবল (১৯৬৫), ইউ ওনলি লিভ টোয়াইস (১৯৬৭), ডায়মন্ডস আর ফরেভার (১৯৭১) এবং নেভার সে নেভার এগেন (১৯৮৩) । এরমধ্যে নেভার সে নেভার এগেন ছিল আনঅফিসিয়াল বন্ড মুভি ।

বেশিরভাগ সমালোচকের মতে শন কোনারির বন্ডই হল বেস্ট বন্ড । এবং তাঁর সিনেমাগুলিই সবথেকে ভাল বন্ড সিনেমা । বিশেষ করে গোল্ডফিঙ্গার এবং থান্ডারবল সিনেমাদুটি কেই সবথেকে জনপ্রিয় হিসাবে ধরা হয় । বলা যেতে পারে জেমস বন্ডের চরিত্র কেমন হওয়া উচিত তা শন কোনারি তাঁর অভিনয়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছিলেন ।

১৯৬৭ সালে ইউ ওনলি লিভ টোয়াইস সিনেমার পরে ১৯৬৯ সালে জেমস বন্ডের ভূমিকায় অভিনয় করেন অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা জর্জ ল্যাজেনবি অন হার ম্যাজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস ছবিতে । জর্জ ল্যাজেনবির অভিনয় ক্ষমতার থেকে তাঁর অ্যাকশন দৃশ্য ও লাফঝাঁপে দক্ষতার জন্যই তাঁকে নির্বাচন করা হয়েছিল । কিন্তু অনেকেই জেমস বন্ডের ভূমিকায় তাঁকে পছন্দ করে উঠতে পারেননি । এই সিনেমাতেই জেমস বন্ড প্রথম এবং শেষ বারের মত বিয়ে করেন । যদিও বিয়ের পরেই তাঁর স্ত্রী মারা যান । সিনেমা হিসাবে অন হার ম্যাজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস মধ্যমানের সাফল্য পেয়েছিল । কিন্তু সিনেমাটি রিলিজের আগেই জর্জ ল্যাজনবি ঘোষনা করেন যে তিনি আর জেমস বন্ডের ভূমিকায় অভিনয় করবেন না । ফলে ১৯৭১ সালে আবার শন কোনারি ফিরে আসেন ডায়মন্ডস আর ফরেভার ছবিতে ।

১৯৭১ সালের পর ১৯৭৩ সালে জেমস বন্ডের ভূমিকায় আসেন নতুন নায়ক রজার মুর । লিভ অ্যান্ড লেট ডাই ছবিতে । এই ছবিতে জেমস বন্ডকে কিছুটা আলাদা ভাবে দেখানো হয়েছিল । এই ছবিতে কখনই বন্ডকে টুপি পরতে বা সিগারেট খেতে দেখা যায় নি । তার বদলে দেখা গেছে সিগার টানতে । লিভ অ্যান্ড লেট ডাই ছবিতে মূলত আফ্রিকান আমেরিকান ব্ল্যাক কালচার কে তুলে ধরা হয়েছিল । এবং প্রথম একজন কালো বন্ড গার্লকে দেখা গেল ।

লিভ অ্যান্ড লেট ডাই ছবির পর রজার মুর দ্য ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন গান (১৯৭৪), দ্য স্পাই হু লাভড মি (১৯৭৭), মুনরেকার (১৯৭৯), ফর ইয়োর আইজ ওনলি (১৯৮১), অক্টোপুসি (১৯৮৩) এবং এ ভিউ টু এ কিল (১৯৮৫) ছবিতে অভিনয় করেন ।

রজার মুরের জেমস বন্ড ছিল অনেক হালকা টাইপের, কিছুটা কমেডি ঘেঁষা । সিনেমাগুলি ভালোই সাফল্য পেয়েছিল । মুনরেকার সিনেমাতে জেমস বন্ডকে মহাকাশে যেতেও দেখা গিয়েছিল । অক্টোপুসি সিনেমাতে বন্ড ভারতে এসেছিল এবং তাকে অটো চড়তেও দেখা গিয়েছিল । তবে অনেক জেমস বন্ড ফ্যানই অসন্তুষ্ট হয়েছিল যখন রজার মুর ছাপান্ন বছর বয়েসে অক্টোপুসি এবং আটান্ন বছর বয়সে এ ভিউ টু এ কিল সিনেমাতে অভিনয় করেন । সবারই বক্তব্য ছিল যে এত বুড়ো বন্ড দিয়ে আর চলে না ।

অবশেষে ১৯৮৭ সালে রজার মুরের বুড়ো বন্ডের বদলে বাজারে এল টিমোথি ডালটনের প্রথম বন্ড সিনেমা দ্য লিভিং ডেলাইট । সিনেমাটি ভালোই সাফল্য লাভ করেছিল । অনেকের মতে টিমোথি ডালটন চেষ্টা করেছিলেন জেমস বন্ডকে আবার সেই ইয়ান ফ্লেমিং এর আসল জেমস বন্ডের মত চেহারা দিতে । কিন্তু টিমোথি ডালটনের ১৯৮৯ সালের সিনেমা লাইসেন্স টু কিল অতটা সাফল্য লাভ করতে পারে নি । এই সিনেমাতে দেখান হয়েছিল জেমস বন্ডকে তার কাজে ইস্তফা দিতে । এবং আমেরিকান বন্ধুর উপর হামলার প্রতিশোধ নিতে ।

১৯৮৯ সালের পর বন্ড সিনেমা কার বানানোর অধিকার আছে এই নিয়ে মামলা শুরু হয় । যার ফলে দীর্ঘ ছয় বছর কোন জেমস বন্ডের সিনেমা রিলিজ করে নি । ১৯৯৪ সালে টিমোথি ডালটন তিনটি জেমস বন্ড ছবি করার চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন । ফলে ১৯৯৫ সালের গোল্ডেন আই ছবির জন্য পিয়ার্স ব্রসনান কে নির্বাচিত করা হয় ।

জেমস বন্ডের ছবি ১

মনে আছে আমি যখন ক্লাস এইটে পড়তাম তখন জেমস বন্ডের নতুন ছবি গোল্ডেন আই মুক্তি পেয়েছিল । তখন আমাদের ক্লাসের কয়েকজন এই সিনেমাটা দেখতে গিয়েছিল । তাদের মুখে সিনেমার অ্যাকশন এবং উত্তেজক দৃশ্যের বর্ণনা শুনে সিনেমাটা দেখতে ইচ্ছে হলেও দেখবার কোন উপায় ছিল না । সেই সময় অশ্লীলতার দায়ে এই সিনেমাটির বিরুদ্ধে কোন কোন ছাত্র সংগঠন বিক্ষোভও দেখিয়েছিল ।

আবার যখন কলেজে পড়ি তখন মুক্তি পেল জেমস বন্ডের নতুন সিনেমা দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ নট এনাফ । সিনেমাটি যেদিন মুক্তি পেল সেদিনই ঠিক করলাম দেখতেই হবে । সেই মত হলে প্রথম দিন প্রথম শোর সময়ে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলাম প্রচন্ড ভিড় কাউন্টার থেকে টিকিট কেনার কোন উপায় নেই । তাই বাধ্য হয়ে ব্ল্যাকেই কাটলাম । তারপর হলে ঢুকে যখন সিটে বসলাম তখন দেখলাম যে পর্দার সামনে একদম প্রথম সারিতে আমার সিট পড়েছে । জীবনে সেই প্রথম একেবারে সামনের সারিতে বসে সিনেমা দেখা । সিনেমা দেখতে গিয়ে তো ঘাড়ের অবস্থা খারাপ । যাই হোক ওই অবস্থাতেই বসে কোনরকমে সিনেমাটা দেখলাম ।

তারও পরে কম্পিউটার কেনার পর সিডিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে দু একটি জেমস বন্ডর সিনেমা দেখেছিলাম । যেমন অন হার ম্যাজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস, লিভিং ডে লাইট প্রভৃতি ।

তারপর একে একে সিডি ডিভিডি এবং ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা ডিআইভিএক্স ফাইলের দৌলতে প্রায় সবকটি জেমস বন্ডের সিনেমাই দেখা হয়েছে । ১৯৬২ সালের ড. নো থেকে আরম্ভ করে হালের ডাই অ্যানাদার ডে অবধি । একেবার নতুন সিনেমা ক্যাসিনো রয়াল এখনও দেখা হয়নি তবে আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি দেখার সুযোগ হবে ।

প্রথম দিকে জেমস বন্ডের সিনেমা দেখার পর অদ্ভুত লাগত যে এত গাঁজাখুরি ঘটনা কিভাবে ঘটতে পারে । জেমস বন্ডের অবিশ্বাস্য রকমের লাক । যেকোন রকমের বিপদ থেকেই সে যেকোন ভাবে বেরিয়ে আসতে পারে । তারপর নানা রকমের আশ্চর্য রকমের গাড়ি সাবমেরিন আর বিভিন্ন হাইটেক যন্ত্র । পরে বুঝতে পারলাম জেমস বন্ডের জনপ্রিয়তার কারণই হচ্ছে এই গাঁজাখুরি ঘটনা গুলো । তখন থেকেই জেমস বন্ডের সিনেমাগুলি উপভোগ করতে আরম্ভ করলাম ।

চল্লিশ বছরেরও বেশী সময় ধরে জেমস বন্ড ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে । প্রত্যেক সিনেমায় গড়ে দুটি করে মহিলাকে সে শয্যাসঙ্গিনী করতে সক্ষম হয়েছে । মানে একুশটি সিনেমায় তাকে চল্লিশ জনেরও বেশী মহিলার সাথে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করতে দেখা গেছে । প্রত্যেক সিনেমায় বহু বার তার কানের পাশ দিয়ে গুলি বেরিয়ে গেছে অথবা আততায়ী তাকে হাতের মুঠোও পেয়েও হত্যা করতে ইতস্তত করেছে তার ফলে বন্ড যেভাবেই হোক বেঁচে পালিয়েছে । মানুষ ছাড়াও হাঙর, সাপ, বাঘ, বিছে, কুমীর প্র‌ভৃতি তাকে বহুবার আক্রমন করেছে কিন্তু তাতেও বন্ডের কিছুই হয়নি । প্যারাসুট ছাড়াও প্লেন থেকে ঝাঁপ দিয়েও বন্ড বেঁচে গেছে । যাই হোক এসব নিয়ে খামোখা প্রশ্ন তুললে আপনার জেমস বন্ডের ছবি ভালো লাগবে না । ভাল লাগবে না যদি ভাবতে বসেন নানা রকম ইন্টেলেকচুয়াল কথাবার্তা যে জেমস বন্ড পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদীদের একটা প্রোপাগান্ডা প্র‌ভৃতি । জেমস বন্ডের ছবি মানেই হল ভরপুর বিনোদন এবং আমার এগুলো দেখতে ভালই লাগে ।

Sunday, January 07, 2007

সিঙ্গুরের পর নন্দীগ্রাম...পশ্চিমবাংলা কোন পথে

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে যখন বামফ্রন্ট গত নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিল তখন তার মধ্যে একটা অশনি সংকেত লুকিয়ে ছিল । নির্বাচনে বিপুল জয় সিপিএমের নেতাদের মধ্যে একটা ধারনা এনে দিয়েছে যে তাঁরা পশ্চিমবাংলায় এখন যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন । তারই ফলস্বরূপ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে গ্রামবাসীদের যেকোন উপায়ে উৎখাত করে শিল্পস্থাপন করবার জন্য তাঁরা উঠে পড়ে লেগেছেন । এরজন্য কখনও পুলিশ আবার কখনও বা সিপিএমের ক্যাডার বাহিনীকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্রামবাসীদের উপরে । আর বার বার বলা হচ্ছে যে এই সব গণ্ডোগোল নাকি বহিরাগতদের কাজ ।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে বহিরাগত কারা ? একজন পশ্চিমবঙ্গ বাসী কি পশ্চিমবঙ্গের ভিতরেই বহিরাগত হতে পারেন । অথবা একজন ভারতবাসী ভারতবর্ষের ভিতরে । সুতরাং একজন পশ্চিমবঙ্গবাসী অথবা ভারতের যেকোন জায়গার লোক যদি এই সব কৃষকদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান তবে তাঁদের বহিরাগত বলা হবে কেন ? আর মাত্র কয়েকজন বহিরাগতদের পক্ষে কি সম্ভব গ্রামবাসীদের প্রভাবিত করা । আর যদি তাঁরা বহিরাগতই হবেন তবে গ্রামবাসীরা এই বহিরাগতদের কথা শুনবেন কেন ?

কাল রাতে নন্দীগ্রামে বিশাল সংঘর্ষ হয়েছে এবং তাতে ছয় সাত জনের এখনও অবধি মৃত্যু হয়েছে । এবং এই সংঘর্ষের সময়ে কোন পুলিশের দেখা মেলেনি । অথচ বেশ কয়েকদিন ধরেই নন্দীগ্রাম উত্তাল এবং খবরের শিরোনামে সুতরাং সেখানে প্রশাসনের আগে থেকেই সতর্ক থাকা প্রয়োজন ছিল । তার মানে সিপিএমের গুন্ডাবাহিনী গ্রাম আক্রমন যাতে সুষ্ঠুভাবে করতে পারে সেজন্যই পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভাবে বসে ছিল । এখন সাংসদ লক্ষণ শেঠের প্ল্যান হল গ্রাম আক্রমন করে গ্রামের পুরুষদের গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিয়ে গ্রামগুলোকে দখল করে নেওয়া । যা সিপিএম কেশপুরে করে এসেছে বহুদিন ধরে ।

কিন্তু গ্রামের মানুষ এত সহজে ছেড়ে দেবে না । কমিউনিস্টদের অনেক বুড়ো নেতা এখনও বিশ্বাস করেন যে দেশে বিপ্লব হবে । এবার মনে হচ্ছে যে পশ্চিমবঙ্গে সত্যিই বিপ্লব আসতে চলেছে খালি একটাই পার্থক্য যে বিপ্লবটা আসছে তাঁদের বিরুদ্ধেই । সিপিএমের পতাকায় আর কাস্তে হাতুড়ি রাখার কোন মানে হয় না । তাঁদের জঙ্গী ট্রেড ইউনিয়ন গুলো অনেক আগেই হাতুড়ির ঘা দিয়ে বহু শিল্প ধ্বংস করেছে । এবং এখন মেকি শিল্পায়নের নামে কৃষির উপরেরও আঘাত হানছে ।

শিল্পায়নের প্রশ্নে যদি পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রথম থেকে স্বচ্ছ নীতি গ্রহন করত তবে হয়ত এই সমস্যা তৈরি হত না । গ্রামবাসীদের বলা হচ্ছে চাকরি দেওয়া হবে টাকা পয়সা দেওয়া হবে । কিন্তু আমাদের দেশে যেখানে সমস্ত কাজেই আঠারো মাসে বছর, সেখানে এই সুযোগ সুবিধা না পাওয়ার সম্ভাবনা সব সময়েই থেকে যায় । জমি নিয়ে নেওয়ার পর হয়ত দেখা গেল চাষীরা টাকা পয়সা সুযোগ সুবিধা সব পেলেন না । তাই গ্রামের মানুষদের আগে অন্য জায়গায় ঠিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে তারপরেই তাঁদের জমি অধিগ্রহন করতে হবে । এব্যাপারে তাড়াহুড়ো করলে চাষীরা কখনই ছেড়ে কথা কইবে না ।