জেমস বন্ডের ছবি ৩
সাধারন ভাবে জেমস বন্ডের সমস্ত সিনেমাই আরম্ভ হয় জেমস বন্ডের হেঁটে আসা এবং ক্যামেরার দিকে একটি গুলি ছোঁড়ার দৃশ্যের ভিতর দিয়ে । তারপর জেমস বন্ডের একটি অ্যাকশন দৃশ্য দেখানো হয় । অ্যাকশন দৃশ্যটির পরে সিনেমার টাইটেল আসে । প্রথম সিনেমা ড. নো তে অবশ্য কোন স্টার্টিং অ্যাকশন দৃশ্য ছিল না । টাইটেলের আগের এই অ্যাকশন দৃশ্যটা প্রায় যেকোন বন্ড সিনেমারই প্রধান আকর্ষনের বিষয় । এই দৃশ্যে বন্ড কোন এক কঠিন সমস্যার সমাধান করে প্রায় মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে ।
মুনরেকার সিনেমার প্রিটাইটেল সিকোয়েন্সে দেখা গিয়েছিল বন্ডকে প্যারাসুট ছাড়াই প্লেন থেকে ফেলে দেওয়া হয় তারপর বন্ড আকাশেই ভাসতে ভাসতে এক ভিলেনকে আক্রমন করে তার কাছ থেকে প্যারাসুট কেড়ে নিয়ে নিচে নেমে আসে । গোল্ডেন আই এবং লিভিং ডেলাইট সিনেমাতেও প্রায় একই রকম ব্যাপার ছিল । গোল্ডেন আইতে বন্ড খাদে ঝাঁপ দেয় এবং সেই খাদে পতনরত একটি পাইলট বিহীন প্লেনের ভিতর ঢুকে প্লেন চালিয়ে পালায়। লিভিং ডেলাইট সিনেমায় বন্ড একটি খাদে পতনরত জিপের ভিতর ভিলেনের সঙ্গে মারামারি করতে থাকে তারপর একসময় বন্ড প্যারাসুট নিয়ে জিপের বাইরে বেরিয়ে আসে ।
ডাই অ্যানাদার ডে সিনেমার প্রিটাইটেল সিকোয়েন্স একটু অন্যরকম । এখানে বন্ড শেষ পর্যন্ত পালাতে পারে না এবং উত্তর কোরিয়ার মিলিটারির হাতে ধরা পড়ে যায় এবং বন্দী অবস্থায় এক বছরেরও বেশী সময় কাটায় । আবার লিভ অ্যান্ড লেট ডাই সিনেমার প্রিটাইটেল সিকোয়েন্সে বন্ডকে দেখানোই হয়নি । ফর ইওর আইজ ওনলি সিনেমাতে দেখানো হয়েছিল ভিলেন বন্ডকে একটি রিমোট কন্ট্রোল চালিত হেলিকপ্টারে বন্দী করে মারবার ছক করে । কিন্তু বন্ড শেষ অবধি বেঁচে যায় এবং ভিলেনকে হত্যা করে । ইউ ওনলি লিভ টোয়াইস সিনেমার শুরুতেই দেখান হয়েছিল যে বন্ড কিছু আততায়ীর হাতে খুন হল । কিন্তু পুরো ব্যাপারটাই ছিল সাজানো । বন্ডকে মৃত সাজিয়ে বিপক্ষের চোখে ধুলো দেবার জন্যেই পুরো প্ল্যানটা ছকা হয়েছিল ।
প্রিটাইটেল সিকোয়েন্সগুলির মধ্যে আমার সবথেকে প্রিয় দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ নট এনাফ সিনেমার প্রায় চোদ্দ মিনিটের সিকোয়েন্স । এখানে লন্ডনের টেমস নদীতে বোটে চেপে লোমহর্ষক ভাবে বন্ড এক মেয়ে ভিলেনের পিছু নেয় । একসময় জলের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময়েও বন্ডকে দেখা যায় টাই ঠিক করতে । ইংরাজি সিনেমায় আমার দেখা সেরা চেজিং দৃশ্যগুলির মধ্যে এটি অন্যতম ।
প্রিটাইটেল সিকোয়েন্সের পরে আসে বন্ড সিনেমার টাইটেল । বন্ডের প্রত্যেক টাইটেলেই নগ্ন নারীশরীর দিয়ে নানা রকমের অ্যানিমেশন কোলাজ দেখান হয় । নগ্ন নারীশরীরের এরকম শিল্পসম্মত ব্যবহার খুব কমই দেখা যায় । সেই সাথে থাকে বিখ্যাত শিল্পীদের গাওয়া গান । বন্ড সিনেমার টাইটেল মিউজিকের জন্য অনেকেই কন্ঠ দিয়েছেন । যেমন পল ম্যাককার্টনি, শেরিল ক্রো, ম্যাডোনা প্রভৃতি ।
আমার সবথেকে প্রিয় বন্ড টাইটেল হল গোল্ডেন আই সিনেমার টাইটেল। এই সিনেমার টাইটেলে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন কে সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছিল ।
No comments:
Post a Comment