জেমস বন্ডের ছবি ২
জেমস বন্ডের ভূমিকায় প্রথম সিনেমায় অভিনয় করেন শন কোনারি । প্রথম সিনেমা ছিল ড. নো (১৯৬২) । শন কোনারি ড. নো ছাড়াও আরও ছয়টি সিনেমাতে জেমস বন্ডের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন । সেগুলো হল ফ্রম রাশিয়া উইথ লাভ (১৯৬৩), গোল্ডফিঙ্গার (১৯৬৪), থান্ডারবল (১৯৬৫), ইউ ওনলি লিভ টোয়াইস (১৯৬৭), ডায়মন্ডস আর ফরেভার (১৯৭১) এবং নেভার সে নেভার এগেন (১৯৮৩) । এরমধ্যে নেভার সে নেভার এগেন ছিল আনঅফিসিয়াল বন্ড মুভি ।
বেশিরভাগ সমালোচকের মতে শন কোনারির বন্ডই হল বেস্ট বন্ড । এবং তাঁর সিনেমাগুলিই সবথেকে ভাল বন্ড সিনেমা । বিশেষ করে গোল্ডফিঙ্গার এবং থান্ডারবল সিনেমাদুটি কেই সবথেকে জনপ্রিয় হিসাবে ধরা হয় । বলা যেতে পারে জেমস বন্ডের চরিত্র কেমন হওয়া উচিত তা শন কোনারি তাঁর অভিনয়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছিলেন ।
১৯৬৭ সালে ইউ ওনলি লিভ টোয়াইস সিনেমার পরে ১৯৬৯ সালে জেমস বন্ডের ভূমিকায় অভিনয় করেন অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা জর্জ ল্যাজেনবি অন হার ম্যাজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস ছবিতে । জর্জ ল্যাজেনবির অভিনয় ক্ষমতার থেকে তাঁর অ্যাকশন দৃশ্য ও লাফঝাঁপে দক্ষতার জন্যই তাঁকে নির্বাচন করা হয়েছিল । কিন্তু অনেকেই জেমস বন্ডের ভূমিকায় তাঁকে পছন্দ করে উঠতে পারেননি । এই সিনেমাতেই জেমস বন্ড প্রথম এবং শেষ বারের মত বিয়ে করেন । যদিও বিয়ের পরেই তাঁর স্ত্রী মারা যান । সিনেমা হিসাবে অন হার ম্যাজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস মধ্যমানের সাফল্য পেয়েছিল । কিন্তু সিনেমাটি রিলিজের আগেই জর্জ ল্যাজনবি ঘোষনা করেন যে তিনি আর জেমস বন্ডের ভূমিকায় অভিনয় করবেন না । ফলে ১৯৭১ সালে আবার শন কোনারি ফিরে আসেন ডায়মন্ডস আর ফরেভার ছবিতে ।
১৯৭১ সালের পর ১৯৭৩ সালে জেমস বন্ডের ভূমিকায় আসেন নতুন নায়ক রজার মুর । লিভ অ্যান্ড লেট ডাই ছবিতে । এই ছবিতে জেমস বন্ডকে কিছুটা আলাদা ভাবে দেখানো হয়েছিল । এই ছবিতে কখনই বন্ডকে টুপি পরতে বা সিগারেট খেতে দেখা যায় নি । তার বদলে দেখা গেছে সিগার টানতে । লিভ অ্যান্ড লেট ডাই ছবিতে মূলত আফ্রিকান আমেরিকান ব্ল্যাক কালচার কে তুলে ধরা হয়েছিল । এবং প্রথম একজন কালো বন্ড গার্লকে দেখা গেল ।
লিভ অ্যান্ড লেট ডাই ছবির পর রজার মুর দ্য ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন গান (১৯৭৪), দ্য স্পাই হু লাভড মি (১৯৭৭), মুনরেকার (১৯৭৯), ফর ইয়োর আইজ ওনলি (১৯৮১), অক্টোপুসি (১৯৮৩) এবং এ ভিউ টু এ কিল (১৯৮৫) ছবিতে অভিনয় করেন ।
রজার মুরের জেমস বন্ড ছিল অনেক হালকা টাইপের, কিছুটা কমেডি ঘেঁষা । সিনেমাগুলি ভালোই সাফল্য পেয়েছিল । মুনরেকার সিনেমাতে জেমস বন্ডকে মহাকাশে যেতেও দেখা গিয়েছিল । অক্টোপুসি সিনেমাতে বন্ড ভারতে এসেছিল এবং তাকে অটো চড়তেও দেখা গিয়েছিল । তবে অনেক জেমস বন্ড ফ্যানই অসন্তুষ্ট হয়েছিল যখন রজার মুর ছাপান্ন বছর বয়েসে অক্টোপুসি এবং আটান্ন বছর বয়সে এ ভিউ টু এ কিল সিনেমাতে অভিনয় করেন । সবারই বক্তব্য ছিল যে এত বুড়ো বন্ড দিয়ে আর চলে না ।
অবশেষে ১৯৮৭ সালে রজার মুরের বুড়ো বন্ডের বদলে বাজারে এল টিমোথি ডালটনের প্রথম বন্ড সিনেমা দ্য লিভিং ডেলাইট । সিনেমাটি ভালোই সাফল্য লাভ করেছিল । অনেকের মতে টিমোথি ডালটন চেষ্টা করেছিলেন জেমস বন্ডকে আবার সেই ইয়ান ফ্লেমিং এর আসল জেমস বন্ডের মত চেহারা দিতে । কিন্তু টিমোথি ডালটনের ১৯৮৯ সালের সিনেমা লাইসেন্স টু কিল অতটা সাফল্য লাভ করতে পারে নি । এই সিনেমাতে দেখান হয়েছিল জেমস বন্ডকে তার কাজে ইস্তফা দিতে । এবং আমেরিকান বন্ধুর উপর হামলার প্রতিশোধ নিতে ।
১৯৮৯ সালের পর বন্ড সিনেমা কার বানানোর অধিকার আছে এই নিয়ে মামলা শুরু হয় । যার ফলে দীর্ঘ ছয় বছর কোন জেমস বন্ডের সিনেমা রিলিজ করে নি । ১৯৯৪ সালে টিমোথি ডালটন তিনটি জেমস বন্ড ছবি করার চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন । ফলে ১৯৯৫ সালের গোল্ডেন আই ছবির জন্য পিয়ার্স ব্রসনান কে নির্বাচিত করা হয় ।
No comments:
Post a Comment