Friday, November 14, 2008

বাংলা যুক্তবর্ণের তালিকা


যুক্তবর্ণ বলতে একাধিক ব্যঞ্জনবর্ণের সমষ্টিকে বোঝানো হয়েছে। বাংলা লিখনপদ্ধতিতে যুক্তবর্ণের একটি বিশেষ স্থান আছে। এগুলি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উপাদান বর্ণগুলির চেয়ে দেখতে ভিন্ন, ফলে নতুন শিক্ষার্থীর এগুলি লেখা আয়ত্ত করতে সময়ের প্রয়োজন হয়।

যুক্তবর্ণগুলি বাংলা লিখন পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য। উচ্চারিত ধ্বনির সাথে এগুলির উপাদান ব্যঞ্জনবর্ণের নির্দেশিত ধ্বনির সবসময় সরাসরি সম্পর্ক না-ও থাকতে পারে। যেমন - পক্ব -এর উচ্চারণ পক্‌কো; বানানে ব-ফলা থাকলেও উচ্চারণে ব ধ্বনিটি অনুপস্থিত। রুক্ষ-এর উচ্চারণ রুক্‌খো; বানানের নিয়ম অনুযায়ী ক্ষ যুক্তবর্ণটি ক ও ষ-এর যুক্তরূপ হলেও উচ্চারণ হয় ক্‌খ। বানান ও ধ্বনির এই অনিয়মও শিক্ষার্থীর জন্য যুক্তবর্ণের সঠিক ব্যবহারে একটি বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

নিচের যুক্তবর্ণের তালিকাটি বাংলা সঠিকভাবে লিখতে সহায়ক হতে পারে। এখানে বাংলায় ব্যবহৃত ২৮৫টি যুক্তবর্ণ দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কোন যুক্তবর্ণ সম্ভবত বাংলায় প্রচলিত নয়।




1. ক্ক = ক + ক; যেমন- আক্কেল, টেক্কা
2. ক্ট = ক + ট; যেমন- ডক্টর (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
3. ক্ট্র = ক + ট + র; যেমন- অক্ট্রয়
4. ক্ত = ক + ত; যেমন- রক্ত
5. ক্ত্র = ক + ত + র; যেমন- বক্ত্র
6. ক্ব = ক + ব; যেমন- পক্ব, ক্বণ
7. ক্ম = ক + ম; যেমন- রুক্মিণী
8. ক্য = ক + য; যেমন- বাক্য
9. ক্র = ক + র; যেমন- চক্র
10. ক্ল = ক + ল; যেমন- ক্লান্তি
11. ক্ষ = ক + ষ; যেমন- পক্ষ
12. ক্ষ্ণ = ক + ষ + ণ; যেমন- তীক্ষ্ণ
13. ক্ষ্ব = ক + ষ + ব; যেমন- ইক্ষ্বাকু
14. ক্ষ্ম = ক + ষ + ম; যেমন- লক্ষ্মী
15. ক্ষ্ম্য = ক + ষ + ম + য; যেমন- সৌক্ষ্ম্য
16. ক্ষ্য = ক + ষ + য; যেমন- লক্ষ্য
17. ক্স = ক + স; যেমন- বাক্স
18. খ্য = খ + য; যেমন- সখ্য
19. খ্র = খ+ র যেমন; যেমন- খ্রিস্টান
20. গ্‌ণ = গ + ণ; যেমন - রুগ্‌ণ
21. গ্ধ = গ + ধ; যেমন- মুগ্ধ
22. গ্ধ্য = গ + ধ + য; যেমন- বৈদগ্ধ্য
23. গ্ধ্র = গ + ধ + র; যেমন- দোগ্ধ্রী
24. গ্ন = গ + ন; যেমন- ভগ্ন
25. গ্ন্য = গ + ন + য; যেমন- অগ্ন্যাস্ত্র, অগ্ন্যুৎপাত, অগ্ন্যাশয়
26. গ্ব = গ + ব; যেমন- দিগ্বিজয়ী
27. গ্ম = গ + ম; যেমন- যুগ্ম
28. গ্য = গ + য; যেমন- ভাগ্য
29. গ্র = গ + র; যেমন- গ্রাম
30. গ্র্য = গ + র + য; যেমন- ঐকাগ্র্য, সামগ্র্য, গ্র্যাজুয়েট
31. গ্ল = গ + ল; যেমন- গ্লানি
32. ঘ্ন = ঘ + ন; যেমন- কৃতঘ্ন
33. ঘ্য = ঘ + য; যেমন- অশ্লাঘ্য
34. ঘ্র = ঘ + র; যেমন- ঘ্রাণ
35. ঙ্ক = ঙ + ক; যেমন- অঙ্ক
36. ঙ্‌ক্ত = ঙ + ক + ত; যেমন- পঙ্‌ক্তি
37. ঙ্ক্য = ঙ + ক + য; যেমন- অঙ্ক্য
38. ঙ্ক্ষ = ঙ + ক + ষ; যেমন- আকাঙ্ক্ষা
39. ঙ্খ = ঙ + খ; যেমন- শঙ্খ
40. ঙ্গ = ঙ + গ; যেমন- অঙ্গ
41. ঙ্গ্য = ঙ + গ + য; যেমন- ব্যঙ্গ্যার্থ, ব্যঙ্গ্যোক্তি
42. ঙ্ঘ = ঙ + ঘ; যেমন- সঙ্ঘ
43. ঙ্ঘ্য = ঙ + ঘ + য; যেমন- দুর্লঙ্ঘ্য
44. ঙ্ঘ্র = ঙ + ঘ + র; যেমন- অঙ্ঘ্রি
45. ঙ্ম = ঙ + ম; যেমন- বাঙ্ময়
46. চ্চ = চ + চ; যেমন- বাচ্চা
47. চ্ছ = চ + ছ; যেমন- ইচ্ছা
48. চ্ছ্ব = চ + ছ + ব; যেমন- জলোচ্ছ্বাস
49. চ্ছ্র = চ + ছ + র; যেমন- উচ্ছ্রায়
50. চ্ঞ = চ + ঞ; যেমন- যাচ্ঞা
51. চ্ব = চ + ব; যেমন- চ্বী
52. চ্য = চ + য; যেমন- প্রাচ্য
53. জ্জ = জ + জ; যেমন- বিপজ্জনক
54. জ্জ্ব = জ + জ + ব; যেমন- উজ্জ্বল
55. জ্ঝ = জ + ঝ; যেমন- কুজ্ঝটিকা
56. জ্ঞ = জ + ঞ; যেমন- জ্ঞান
57. জ্ব = জ + ব; যেমন- জ্বর
58. জ্য = জ + য; যেমন- রাজ্য
59. জ্র = জ + র; যেমন- বজ্র
60. ঞ্চ = ঞ + চ; যেমন- অঞ্চল
61. ঞ্ছ = ঞ + ছ; যেমন- লাঞ্ছনা
62. ঞ্জ = ঞ + জ; যেমন- কুঞ্জ
63. ঞ্ঝ = ঞ + ঝ; যেমন- ঝঞ্ঝা
64. ট্ট = ট + ট; যেমন- চট্টগ্রাম
65. ট্ব = ট + ব; যেমন- খট্বা
66. ট্ম = ট + ম; যেমন- কুট্মল
67. ট্য = ট + য; যেমন- নাট্য
68. ট্র = ট + র; যেমন- ট্রেন (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
69. ড্ড = ড + ড; যেমন- আড্ডা
70. ড্ব = ড + ব; যেমন- অন্ড্বান
71. ড্য = ড + য; যেমন- জাড্য
72. ড্র = ড + র; যেমন- ড্রাইভার, ড্রাম (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
73. ড়্গ = ড় + গ; যেমন- খড়্‌গ
74. ঢ্য = ঢ + য; যেমন- ধনাঢ্য
75. ঢ্র = ঢ + র; যেমন- মেঢ্র (ত্বক) (মন্তব্য: অত্যন্ত বিরল)
76. ণ্ট = ণ + ট; যেমন- ঘণ্টা
77. ণ্ঠ = ণ + ঠ; যেমন- কণ্ঠ
78. ণ্ঠ্য = ণ + ঠ + য; যেমন- কণ্ঠ্য
79. ণ্ড = ণ + ড; যেমন- গণ্ডগোল
80. ণ্ড্য = ণ + ড + য; যেমন- পাণ্ড্য
81. ণ্ড্র = ণ + ড + র; যেমন- পুণ্ড্র
82. ণ্ঢ = ণ + ঢ; যেমন- ষণ্ঢ
83. ণ্ণ = ণ + ণ; যেমন- বিষণ্ণ
84. ণ্ব = ণ + ব; যেমন- স্হাণ্বীশ্বর
85. ণ্ম = ণ + ম; যেমন- চিণ্ময়
86. ণ্য = ণ + য; যেমন- পূণ্য
87. ৎক = ত + ক; যেমন- উৎকট
88. ত্ত = ত + ত; যেমন- উত্তর
89. ত্ত্ব = ত + ত + ব; যেমন- সত্ত্ব
90. ত্ত্য = ত + ত + য; যেমন- উত্ত্যক্ত
91. ত্থ = ত + থ; যেমন- অশ্বত্থ
92. ত্ন = ত + ন; যেমন- যত্ন
93. ত্ব = ত + ব; যেমন- রাজত্ব
94. ত্ম = ত + ম; যেমন- আত্মা
95. ত্ম্য = ত + ম + য; যেমন- দৌরাত্ম্য
96. ত্য = ত + য; যেমন- সত্য
97. ত্র = ত + র যেমন- ত্রিশ, ত্রাণ
98. ত্র্য = ত + র + য; যেমন- বৈচিত্র্য
99. ৎল = ত + ল; যেমন- কাৎলা
100. ৎস = ত + স; যেমন- বৎসর, উৎসব
101. থ্ব = থ + ব; যেমন- পৃথ্বী
102. থ্য = থ + য; যেমন- পথ্য
103. থ্র = থ + র; যেমন- থ্রি (three) (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
104. দ্গ = দ + গ; যেমন- উদ্গম
105. দ্ঘ = দ + ঘ; যেমন- উদ্ঘাটন
106. দ্দ = দ + দ; যেমন- উদ্দেশ্য
107. দ্দ্ব = দ + দ + ব; যেমন- তদ্দ্বারা
108. দ্ধ = দ + ধ; যেমন- রুদ্ধ
109. দ্ব = দ + ব; যেমন- বিদ্বান
110. দ্ভ = দ + ভ; যেমন- অদ্ভুত
111. দ্ভ্র = দ + ভ + র; যেমন- উদ্ভ্রান্ত
112. দ্ম = দ + ম; যেমন- ছদ্ম
113. দ্য = দ + য; যেমন- বাদ্য
114. দ্র = দ + র; যেমন- রুদ্র
115. দ্র্য = দ + র + য; যেমন- দারিদ্র্য
116. ধ্ন = ধ + ন; যেমন- অর্থগৃধ্নু
117. ধ্ব = ধ + ব; যেমন- ধ্বনি
118. ধ্ম = ধ + ম; যেমন- উদরাধ্মান
119. ধ্য = ধ + য; যেমন- আরাধ্য
120. ধ্র = ধ + র; যেমন- ধ্রুব
121. ন্ট = ন + ট; যেমন- প্যান্ট (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
122. ন্ট্র = ন + ট + র; যেমন- কন্ট্রোল (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
123. ন্ঠ = ন + ঠ; যেমন- লন্ঠন
124. ন্ড = ন + ড; যেমন- গন্ডার, পাউন্ড
125. ন্ড্র = ন + ড + র; যেমন- হান্ড্রেড
126. ন্ত = ন + ত; যেমন- জীবন্ত
127. ন্ত্ব = ন + ত + ব; যেমন- সান্ত্বনা
128. ন্ত্য = ন + ত + য; যেমন- অন্ত্য
129. ন্ত্র = ন + ত + র; যেমন- মন্ত্র
130. ন্ত্র্য = ন + ত + র + য; যেমন- স্বাতন্ত্র্য
131. ন্থ = ন + থ; যেমন- গ্রন্থ
132. ন্থ্র = ন + থ + র; যেমন- অ্যান্থ্রাক্স (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
133. ন্দ = ন + দ; যেমন- ছন্দ
134. ন্দ্য = ন + দ + য; যেমন- অনিন্দ্য
135. ন্দ্ব = ন + দ + ব; যেমন- দ্বন্দ্ব
136. ন্দ্র = ন + দ + র; যেমন- কেন্দ্র
137. ন্ধ = ন + ধ; যেমন- অন্ধ
138. ন্ধ্য = ন + ধ + য; যেমন- বিন্ধ্য
139. ন্ধ্র = ন + ধ + র; যেমন- রন্ধ্র
140. ন্ন = ন + ন; যেমন- নবান্ন
141. ন্ব = ন + ব; যেমন- ধন্বন্তরি
142. ন্ম = ন + ম; যেমন- চিন্ময়
143. ন্য = ন + য; যেমন- ধন্য
144. প্ট = প + ট; যেমন- পাটি-সাপ্টা, ক্যাপ্টেন (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
145. প্ত = প + ত; যেমন- সুপ্ত
146. প্ন = প + ন; যেমন- স্বপ্ন
147. প্প = প + প; যেমন- ধাপ্পা
148. প্য = প + য; যেমন- প্রাপ্য
149. প্র = প + র; যেমন- ক্ষিপ্র
150. প্র্য = প + র + য; যেমন- প্র্যাকটিস (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
151. প্ল = প + ল; যেমন-আপ্লুত
152. প্স = প + স; যেমন- লিপ্সা
153. ফ্র = ফ + র; যেমন- ফ্রক, ফ্রিজ, আফ্রিকা, রেফ্রিজারেটর (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
154. ফ্ল = ফ + ল; যেমন- ফ্লেভার (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
155. ব্জ = ব + জ; যেমন- ন্যুব্জ
156. ব্দ = ব + দ; যেমন- জব্দ
157. ব্ধ = ব + ধ; যেমন- লব্ধ
158. ব্ব = ব + ব; যেমন- ডাব্বা
159. ব্য = ব + য; যেমন- দাতব্য
160. ব্র = ব + র; যেমন- ব্রাহ্মণ
161. ব্ল = ব + ল; যেমন- ব্লাউজ
162. ভ্ব =ভ + ব; যেমন- ভ্বা
163. ভ্য = ভ + য; যেমন- সভ্য
164. ভ্র = ভ + র; যেমন- শুভ্র
165. ম্ন = ম + ন; যেমন- নিম্ন
166. ম্প = ম + প; যেমন- কম্প
167. ম্প্র = ম + প + র; যেমন- সম্প্রতি
168. ম্ফ = ম + ফ; যেমন- লম্ফ
169. ম্ব = ম + ব; যেমন- প্রতিবিম্ব
170. ম্ব্র = ম + ব + র; যেমন- মেম্ব্রেন (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
171. ম্ভ = ম + ভ; যেমন- দম্ভ
172. ম্ভ্র = ম + ভ + র; যেমন- সম্ভ্রম
173. ম্ম = ম + ম; যেমন- সম্মান
174. ম্য = ম + য; যেমন- গ্রাম্য
175. ম্র = ম + র; যেমন- নম্র
176. ম্ল = ম + ল; যেমন- অম্ল
177. য্য = য + য; যেমন- ন্যায্য
178. র্ক = র + ক; যেমন - তর্ক
179. র্ক্য = র + ক + য; যেমন- অতর্ক্য (তর্ক দিয়ে যার সমাধান হয় না)
180. র্গ্য = র + গ + য; যেমন - বর্গ্য (বর্গসম্বন্ধীয়)
181. র্ঘ্য = র + ঘ + য; যেমন- দৈর্ঘ্য
182. র্চ্য = র + চ + য; যেমন- অর্চ্য (পূজনীয়)
183. র্জ্য = র + জ + য; যেমন- বর্জ্য
184. র্ণ্য = র + ণ + য; যেমন- বৈবর্ণ্য (বিবর্ণতা)
185. র্ত্য = র + ত + য; যেমন- মর্ত্য
186. র্থ্য = র + থ + য; যেমন- সামর্থ্য
187. র্ব্য = র + ব + য; যেমন- নৈর্ব্যক্তিক
188. র্ম্য = র + ম + য; যেমন- নৈষ্কর্ম্য
189. র্শ্য = র + শ + য; যেমন- অস্পর্শ্য
190. র্ষ্য = র + ষ + য; যেমন- ঔৎকর্ষ্য
191. র্হ্য = র + হ + য; যেমন- গর্হ্য
192. র্খ = র + খ; যেমন- মূর্খ
193. র্গ = র + গ; যেমন- দুর্গ
194. র্গ্র = র + গ + র; যেমন- দুর্গ্রহ, নির্গ্রন্হ
195. র্ঘ = র + ঘ; যেমন- দীর্ঘ
196. র্চ = র + চ; যেমন- অর্চনা
197. র্ছ = র + ছ; যেমন- মূর্ছনা
198. র্জ = র + জ; যেমন- অর্জন
199. র্ঝ = র + ঝ; যেমন- নির্ঝর
200. র্ট = র + ট; যেমন- আর্ট, কোর্ট, কম্ফর্টার, শার্ট, কার্টিজ, আর্টিস্ট, পোর্টম্যানটো, সার্টিফিকেট, কনসার্ট, কার্টুন, কোয়ার্টার (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
201. র্ড = র + ড; যেমন- অর্ডার, লর্ড, বর্ডার, কার্ড (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
202. র্ণ = র + ণ; যেমন- বর্ণ
203. র্ত = র + ত; যেমন- ক্ষুধার্ত
204. র্ত্র = র + ত + র; যেমন- কর্ত্রী
205. র্থ = র + থ; যেমন- অর্থ
206. র্দ = র + দ; যেমন- নির্দয়
207. র্দ্ব = র + দ + ব; যেমন- নির্দ্বিধা
208. র্দ্র = র + দ + র; যেমন- আর্দ্র
209. র্ধ = র + ধ; যেমন- গোলার্ধ
210. র্ধ্ব = র + ধ + ব; যেমন- ঊর্ধ্ব
211. র্ন = র + ন; যেমন- দুর্নাম
212. র্প = র + প; যেমন- দর্প
213. র্ফ = র + ফ; যেমন- স্কার্ফ (মন্তব্য: মূলত ইংরেজি ও আরবী-ফার্সি কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
214. র্ভ = র + ভ; যেমন- গর্ভ
215. র্ম = র + ম; যেমন- ধর্ম
216. র্য = র + য; যেমন- আর্য
217. র্ল = র + ল; যেমন- দুর্লভ
218. র্শ = র + শ; যেমন- স্পর্শ
219. র্শ্ব = র+ শ + ব; যেমন- পার্শ্ব
220. র্ষ = র + ষ; যেমন- ঘর্ষণ
221. র্স = র + স; যেমন- জার্সি, নার্স, পার্সেল, কুর্সি (মন্তব্য: মূলত ইংরেজি ও আরবী-ফার্সি কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
222. র্হ = র + হ; যেমন- গার্হস্থ্য
223. র্ঢ্য = র + ঢ + য; যেমন- দার্ঢ্য (অর্থাৎ দৃঢ়তা)
224. ল্ক = ল + ক; যেমন- শুল্ক
225. ল্ক্য = ল + ক + য; যেমন- যাজ্ঞবল্ক্য
226. ল্গ = ল + গ; যেমন- বল্গা
227. ল্ট = ল + ট; যেমন- উল্টো
228. ল্ড = ল + ড; যেমন- ফিল্ডিং (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
229. ল্প = ল + প; যেমন- বিকল্প
230. ল্‌ফ = ল + ফ; যেমন- গল্‌ফ (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
231. ল্ব = ল + ব; যেমন- বিল্ব, বাল্ব
232. ল্‌ভ = ল + ভ; যেমন- প্রগল্‌ভ
233. ল্ম = ল + ম; যেমন- গুল্ম
234. ল্য = ল + য; যেমন- তারল্য
235. ল্ল = ল + ল; যেমন- উল্লাস
236. শ্চ = শ + চ; যেমন- পুনশ্চ
237. শ্ছ = শ + ছ; যেমন- শিরশ্ছেদ
238. শ্ন = শ + ন; যেমন- প্রশ্ন
239. শ্ব = শ + ব; যেমন- বিশ্ব
240. শ্ম = শ + ম; যেমন- জীবাশ্ম
241. শ্য = শ + য; যেমন- অবশ্য
242. শ্র = শ + র; যেমন- মিশ্র
243. শ্ল = শ + ল; যেমন- অশ্লীল
244. ষ্ক = ষ + ক; যেমন- শুষ্ক
245. ষ্ক্র = ষ + ক + র; যেমন- নিষ্ক্রিয়
246. ষ্ট = ষ + ট; যেমন- কষ্ট
247. ষ্ট্য = ষ + ট + য; যেমন- বৈশিষ্ট্য
248. ষ্ট্র = ষ + ট + র; যেমন- রাষ্ট্র
249. ষ্ঠ = ষ + ঠ; যেমন- শ্রেষ্ঠ
250. ষ্ঠ্য = ষ + ঠ + য; যেমন- নিষ্ঠ্যূত
251. ষ্ণ = ষ + ণ; যেমন- কৃষ্ণ
252. ষ্প = ষ + প; যেমন- নিষ্পাপ
253. ষ্প্র = ষ + প + র; যেমন- নিষ্প্রয়োজন
254. ষ্ফ = ষ + ফ; যেমন- নিষ্ফল
255. ষ্ব = ষ + ব; যেমন- মাতৃষ্বসা
256. ষ্ম = ষ + ম; যেমন- উষ্ম
257. ষ্য = ষ + য; যেমন- শিষ্য
258. স্ক = স + ক; যেমন- মনোস্কামনা
259. স্ক্র = স + ক্র; যেমন- ইস্ক্রু (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
260. স্খ = স + খ; যেমন- স্খলন
261. স্ট = স + ট; যেমন- স্টেশন (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
262. স্ট্র = স + ট্র; যেমন- স্ট্রাইক (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
263. স্ত = স + ত; যেমন- ব্যস্ত
264. স্ত্ব = স + ত + ব; যেমন- বহিস্ত্বক
265. স্ত্য = স + ত + য; যেমন-অস্ত্যর্থ
266. স্ত্র = স + ত + র; যেমন- স্ত্রী
267. স্থ = স + থ; যেমন- দুঃস্থ
268. স্থ্য = স + থ + য; যেমন- স্বাস্থ্য
269. স্ন = স + ন; যেমন- স্নান
270. স্প = স + প; যেমন- আস্পর্ধা
271. স্প্র = স + প +র; যেমন- স্প্রিং (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
272. স্প্‌ল = স + প + ল; যেমন- স্প্‌লিন (মন্তব্য: এই যুক্তাক্ষরটি মূলত ইংরেজি/বিদেশী কৃতঋণ শব্দে ব্যবহৃত)
273. স্ফ = স + ফ; যেমন- আস্ফালন
274. স্ব = স + ব; যেমন- স্বর
275. স্ম = স + ম; যেমন- স্মরণ
276. স্য = স + য; যেমন- শস্য
277. স্র = স + র; যেমন- অজস্র
278. স্ল = স + ল; যেমন- স্লোগান
279. হ্ণ = হ + ণ; যেমন- অপরাহ্ণ
280. হ্ন = হ + ন; যেমন- চিহ্ন
281. হ্ব = হ + ব; যেমন- আহ্বান
282. হ্ম = হ + ম; যেমন- ব্রাহ্মণ
283. হ্য = হ + য; যেমন- বাহ্য
284. হ্র = হ + র; যেমন- হ্রদ
285. হ্ল = হ + ল; যেমন- আহ্লাদ


মন্তব্য

১) র্য-কে যুক্তবর্ণ ধরা হয়েছে, কেননা এটি র ও য-এর সমষ্টি। অন্যদিকে র‌্যাব, র‌্যাম, র‌্যাঁদা, ইত্যাদিতে উপস্থিত র‌্য-কে যুক্তবর্ণ হিসেবে ধরা হয়নি, কেননা এটি আসলে র‌্যা-এর অংশ, আর র‌্যা হল র ব্যঞ্জনধ্বনি এবং অ্যা স্বরধ্বনির মিলিত রূপ।

Friday, October 24, 2008

আই অ্যাম লিজেন্ড




সম্প্রতি আই অ্যাম লিজেন্ড ছবিটি দেখার সুযোগ হল । ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্রটি দেখে বেশ ভালো লেগেছে বলতে হবে । মুখ্য ভূমিকায় উইল স্মিথের অভিনয় যথাযথ ।

সিনেমাটির শুরুতে দেখানো হয় টিভিতে ইন্টারভিউতে এক বিজ্ঞানী বলছেন যে তিনি ক্যান্সারের প্রতিষেধক আবিষ্কার করেছেন এবং এতে সাফল্যের পরিমান একশো শতাংশ । তারপরেই তিন বছর বাদের নিউইয়র্ক শহর দেখানো হয় । পুরোপুরি ফাঁকা এক নিস্তব্ধ শহর । রাস্তা জুড়ে গাড়ির সারি কোথাও কোনো জনপ্রানীর চিহ্ণ নেই । শহরের বুকে ছুটে বেড়াচ্ছে হরিণের দল । আর তাদের তাড়া করে ফিরছে সিংহ । পুরো শহরে একজন মাত্র সুস্থ জীবিত মানুষ রবার্ট নেভিল (উইল স্মিথ) । তার একমাত্র সঙ্গী তার পোষা অ্যালসেসিয়ান কুকুরটি ।

ক্যান্সারের প্রতিষেধক বলে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিঙের সাহায্যে যে ভাইরাসটি তৈরি করা হয়েছিল তার সংক্রমনের ফলে পৃথিবীর নব্বই শতাংশ মানুষ আগেই মৃত । আর যে মানুষেরা সংক্রমিত হয়ে মারা যায়নি তারা পরিণত হয়েছে ভয়ানক জম্বি রাক্ষসে । এর বাইরে খুব অল্প সংখ্যক মানুষই বেঁচে আছে ।
এর পর কিভাবে সিনেমার নায়ক বিভিন্ন বিপদের সম্মুখীন হবে এবং অবশেষে এই ভয়ানক ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করবে তা নিয়েই এগিয়েছে গল্প ।

অ্যাপোক্যালিপ্টিক থিম নিয়ে এর মধ্যে অনেকগুলি ছবিই দেখা হয়েছে । যেমন টুয়েন্টি এইট ডেজ ল্যাটার, টুয়েন্টি এইট উইকস ল্যাটার, ডুমসডে, প্রভৃতি এগুলির মধ্যে আই অ্যাম লিজেন্ড ছবিটিকেই সব থেকে ভালো বলে মনে হল । স্পেশাল এফেক্টের সাহায্যে যেভাবে ফাঁকা নিউইয়র্ক শহর দেখানো হয়েছে তা প্রশংসা যোগ্য । তবে টুয়েন্টি এইট উইকস ল্যাটার ছবিতে এরকমই ফাঁকা লণ্ডন শহরে দেখানো হয়েছিল যেটাও বেশ ভালো লেগেছিল ।

সিনেমাটির রেটিং এ দশে সাত দেওয়া যেতেই পারে ।

Thursday, October 02, 2008

ইন্টারনেটের নানা কথা ।

গুগুলের সবই ভালো কিন্তু কিছু কিছু বিষয় কেন যে তারা পরিবর্তন করছে না বোঝা যায় না । যেমন অর্কুটে কেউ যদি স্ক্র্যাপ করে তাহলে ইমেলে নোটিফিকেশন আসে কিন্তু ইচ্ছা করলেই তারা ইমেলে পুরো স্ক্র্যাপটাই পাঠিয়ে দিতে পারে কিন্তু তা দিচ্ছে না । মানে অর্কুটে লগ-ইন না করলে আমি আমার স্ক্র্যাপ পড়তে পারব না ।

আমার কোনোদিনই কোন হটমেল ইমেল আইডি ছিল না । সম্প্রতি একটা তৈরি করলাম । তারপর ভাবলাম এখানের সব মেল আমার জিমেলে অটো ফরোয়ার্ড করে দিই । কিন্তু করতে গিয়ে দেখলাম হটমেল থেকে কেবল অন্য কোন হটমেল অ্যাকাউন্টেই সব মেল অটো ফরোয়ার্ড করা যায় । অন্যকোন ইমেল প্রোভাইডারে ইমেল ফরোয়ার্ড করা যায় না । ফলে আমার জিমেল-এ ফরোয়ার্ড করা গেল না । কিন্তু আমার জিমেল আইডি থেকে সব মেল আমার অন্য একটি ইয়াহু অ্যাকাউন্টে ফরোয়ার্ড করা আছে । তাই আমি ইয়াহু থেকেও আমার মূল জিমেল অ্যাকাউন্টের সব মেল দেখতে পারি । এখানেই বোঝা যায় গুগুলের সাথে মাইক্রোসফটের পার্থক্য কোথায় ।

গুগুলের আয়ের অনেকটাই আসে অনলাইন অ্যাডের মাধ্যমে কিন্তু তারা অ্যাড দেবার সময় ব্যবহারকারীর সুবিধা অসুবিধাগুলি খেয়াল রাখে । মানে তাদের অ্যাডে কোন ছবি বা অ্যানিমেশন থাকে না । শুধু টেক্সট অ্যাড থাকে । ফলে তা ব্যবহারকারীর কাছে কোন বিরক্তিকর জিনিস হয়ে দাঁড়ায় না । তুলনায় দেখা যায় ইয়াহু বা রেডিফের মেলবক্স খুললেই তাতে রংচঙে অ্যাডের ছড়াছড়ি । যা আমার বিশ্রী লাগে । আর এগুলো বেশ কিছুটা ব্যান্ডউইথও খায় । আবার ইয়াহু চ্যাট বা এমএসএন চ্যাট খুললেই মুখের সামনে ধড়াম করে বড় একটা বিজ্ঞাপন খুলে যায় । কাজের সময়ে যা একটা ফালতু উপদ্রব । কিন্তু জিটকে লগ ইন করলে এরকম কোন বিজ্ঞাপন খোলে না । বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে গুগুলের নীতি আমার খুবই পছন্দের ।

সম্প্রতি কয়েকদিন অন্য সবায়ের মত আমিও গুগুল ক্রোম ব্যবহার করে দেখলাম । সুন্দর ডিজাইন আর বেশ তাড়াতাড়ি চলে । কিন্তু তবুও ফায়ারফক্সের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে আসতে বহু দেরি আছে । ফায়ারফক্সের এত ভাল ভাল এক্সটেনশন আছে যে সেগুলো ছাড়া আমার তো চলেই না । গুগুল যদি সেরকম এক্সটেনশন বের করতে পারে তাহলে ভবিষ্যতে হয়ত আরো বেশি ব্যবহার করা যেতে পারে । তবে উইনডোজ ভার্সনে নতুন সাফারি ব্রাউজারটিও খারাপ নয় । এটিও দৌড়ে আছে । ব্রাউজার যুদ্ধ ভবিষ্যতে যে আরো জমে উঠবে সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই ।




Monday, September 29, 2008

কিল আইই সিক্স

একজন ওয়েব ডিজাইনার হিসাবে সবথেকে যন্ত্রনা হল ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৬ তে ওয়েবসাইট ঠিকঠাক বানানো । একা এই ব্রাউজারটি যে ইন্টারনেটকে কতটা পিছনে টেনে রাখছে সেকথা আর বলার নয় । কখনো কখনো রাগে চুল ছিঁড়তে ইচ্ছা করে এই দেখে যে আমার ডিজাইন করা সাইট এইচটিএমএল, সিএসএস লেআউট বানানোর পর সব ব্রাউজারে ভালো ভাবে চলছে কিন্তু আইই ৬তে খোলার পরেই নানা রকমের গণ্ডোগোল চোখে পড়ছে । আর সেগুলিকে ঠিক ঠাক করতে কত ঘন্টা কাজ যে বেশি করতে হচ্ছে তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই ।

নানা রকম বাগে ভরা এই বাজে অথচ চরম জনপ্রিয় সফটওয়্যারটি এখনও সারা পৃথিবীতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষই ব্যবহার করেন । তাই একে উপেক্ষা করা সম্ভব নয় । সাইট বানানো হলে সেটা ফায়ারফক্স, অপেরা, সাফারি, গুগুল ক্রোম প্রভৃতি সব ব্রাউজারেই টেস্ট করা হয় । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোন সমস্যা হলে সেগুলি এই ব্রাউজারগুলিতে ধরা পড়ে । কিন্তু আইই ৬ তে যে সমস্যা গুলি তৈরি হয় তার বেশির ভাগই অন্য কোন ব্রাউজারে হয় না । এই সমস্যাগুলির কারন হচ্ছে কোডের মধ্যে বাগ আর কিছু কিছু ব্যাপারে মাইক্রোসফটের একগুঁয়েমি । আইই ৬ এর বেশ কিছু সমস্যা আইই ৭ এ ঠিক করা হয়েছে কিন্তু মুশকিল হল অনেকই আইই ৬ থেকে ৭ এ আপগ্রেড করেন না । আর আরো একটা মুশকিল হল উইনডোজ এক্সপির ডিফল্ট ব্রাউজার হল আইই ৬ । তাই যখনই কেউ কম্পিউটারে নতুন করে উইনডোজ এক্সপি লোড করেন তখনই আবার আইই ৬ ইন্সস্টল হয়ে যায় ।

আইই ৬তে ট্যাব ব্রাউজিং সহ আধুনিক ইন্টারনেট সার্ফিঙের কোন সুযোগসুবিধাই নেই বললে চলে । তার উপর খুব সাধারন কয়েকটি বৈশিষ্ট্য যেমন সেমি ট্রান্সপারেন্ট পিএনজি ছবির ব্যবহার করা যায় না । (আইই ৬তে সেমি ট্রান্সপারেন্ট পিএনজি ব্যবহার করা সম্ভব । কিন্তু তার জন্য অনেক জটিল পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় যার কিছু নিজস্ব অসুবিধা আছে । ) অথচ অনেক ছোট কম্পানির ব্রাউজারগুলিতে এই সুযোগ সুবিধা অনেকদিন থেকেই আছে । উইনডোজ এক্সপি বেরিয়েছিল ২০০১ সালের অক্টোবরে তার মানে আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগে । এই সাত বছর আগের পুরনো একটা ফালতু ব্রাউজারকে কিছুতেই ঝেড়ে ফেলা যাচ্ছে না । এবং যতদিন উইনডোজ এক্সপির ব্যবহার থাকবে একে নিয়েই আমাদের চলতে হবে । কিন্তু যত তাড়াতাড়ি এই ব্রাউজারের মৃত্যু ঘটে ততই আমাদের পক্ষে মঙ্গল ।

Wednesday, June 18, 2008

অসাধারন একটি বাউল গান

ইউটিউব ঘাঁটতে ঘাঁটতে হঠাৎই নজরে পড়ল এই গানটি দেখুন তো আপনাদের কেমন লাগে


Sunday, June 01, 2008

জিমেল এখন বাংলায়

অনেকদিন আগে থেকেই ইউনিকোড বাংলায় জিমেলে লেখা যেত এবং মেল ফরোয়ার্ড করা যেত । এখন জিমেলের ইন্টারফেসও ইচ্ছা করলে বাংলায় পরিবর্তন করে নেওয়া যেতে পারে । আঞ্চলিক ভাষায় কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য এটা একটা বড় পদক্ষেপ ।

জি মেলের বাংলা ইন্টারফেস আনার জন্য যা করতে হবে ।

১. অবশ্যই আপনার কম্পিউটারে ইউনিকোড বাংলার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে হবে । এবং কমপক্ষে একটি বাংলা ইউনিকোড ফন্ট কম্পিউটারে ইনস্টল করা থাকতে হবে ।
২. জিমেলে ঢুকে ডানদিকে উপরে সেটিংস ট্যাবে চলে যান ।
৩.এবার দেখুন সেটিংসের প্রথম অপশনই হল ল্যাঙ্গুয়েজ অপশন । এখানে ড্রপডাউনে ভাষা বাংলা করে দিন ।
৪. তারপর পাতার নিচে গিয়ে সেভ চেঞ্জেস করুন ।

দেখুন এবার আপনার জিমেল বাংলায় হয়ে গেছে ।

Saturday, May 31, 2008

ক্লোভারফিল্ড

গতকাল ক্লোভারফিল্ড নামের একটি সিনেমা দেখছিলাম । সিনেমাটির বিষয়বস্তু নতুন কিছু নয় একটি অতিকায় প্রাণীর নিউইয়র্ক আক্রমন । এর আগে বহু সিনেমায় যেমন ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে, গডজিলা, কিংকং এ আমরা নিউইয়র্ক শহরে অতিকায় প্রানীর দাপাদাপি দেখেছি । 

কিন্তু সিনেমাটি যেভাবে তোলা হয়েছে তাতে পুরো ব্যাপারটিই একটা আলাদা মাত্রা পেয়ে গেছে । সিনেমাটি পুরোটা তোলা হয়েছে হোম ভিডিও যেভাবে তোলা হয় সেভাবে । পুরো ক্যামেরা টেকনিকটার স্টাইল হল যেন কোন অপেশাদার ক্যামেরা ম্যান পুরোটা তুলেছে । অবশ্য গল্পেও সেটাই ছিল । গল্পের শুরুতে বলা হয় যে ধ্বংসপ্রাপ্ত নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্ক থেকে মিলিটারিরা ক্যামেরাটি উদ্ধার করেছে । সেই ক্যামেরার এডিট না হওয়া ফুটেজটাই হল পুরো সিনেমা । পুরো সিনেমা জুড়ে ক্যামেরা কোন সময়েই স্থির নেই সব সময়েই কাঁপছে অনেক সময়েই যে কথা বলছে তার মুখ দেখা যাচ্ছে না বা তার মুখ কেটে যাচ্ছে । আবার অনেক সময় ক্যামেরা হাত থেকে পড়ে যাচ্ছে বা বেঁকে যাচ্ছে ।   

অর্থাৎ বাড়িতে হ্যান্ডিক্যাম বা মোবাইলে ভিডিও তুললে যা হয় সেই ভাবেই পুরো সিনেমাটি দেখানো হয়েছে । চিত্রগ্রহনের এই পদ্ধতি এর আগে মনসুন ওয়েডিং নামের একটি সিনেমায় দেখেছিলাম কিন্তু এই ধরনের প্যানিক এবং সাই-ফাই সিনেমায় পুরো ব্যাপারটাই আলাদা মাত্রা পেয়েছে । ফার্স্ট পার্সনে চিত্রগ্রহন করার ফলে সিনেমাটি অনেক আকর্ষনীয় হয়েছে । এখানে দর্শক শুধু দর্শক নয় সেও যেন সিনেমাটির একটি চরিত্র । রোমাঞ্চ যেন আরও বেশি করে অনুভব করা গেছে । 

অনেকের কাছেই এই স্টাইলটা বেশ ভাল লেগেছে এবং নতুন জেনারেশনের কাছে এটা গ্রহন যোগ্য কারন তারা এইভাবেই ভিডিও তুলতে অভ্যস্ত । যদিও হলে দেখতে গিয়ে কেউ কেউ মাথা ঘোরা এবং ধরার অভিযোগ জানিয়েছেন । 

Wednesday, March 26, 2008

বালাই ষাট

গায়ক ও কবি কবীর সুমনের ষাট বছরের জন্মদিন উপলক্ষে নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে হয়ে গেল বালাই ষাট বলে একটি সুন্দর অনুষ্ঠান । সুমনের গান গাইলেন বিভিন্ন জেনারেশনের শিল্পীরা । আমি অবশ্য টিভিতেই দেখলাম অনুষ্ঠানটি ।

১৯৯২ সালে সুমনের তোমাকে চাই অ্যালবামটি বেরোনোর পর সুমনকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি । তিনি তাঁর পরের বহু জনপ্রিয় গায়ক গায়িকাকে প্রভাবিত করেছেন । নচিকেতা, অঞ্জন দত্ত, রূপঙ্কর, অনেকই বলেছেন তাঁরা যদি সুমনের গান না শুনতেন তাহলে তার হয়তো কোন দিন গানই গাইতেন না ।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় হৈমন্তী শুক্লার গানের ভিতর দিয়ে । এরপর রূপঙ্কর, দোহার, সাবিনা ইয়াসমিন, ফসিল্‌স, চন্দ্রবিন্দু, শহর, অঞ্জন দত্ত এবং তাঁর ছেলে নীল, শ্রীকান্ত আচার্য, ব্রহ্ম ব্যান্ড, লোপামুদ্রা সবাই গাইলেন ।

দোহারের দুটি গান অনবদ্য লাগল । সুমনের গানের তাঁরা যেন এক অন্য মাত্রা দিলেন । অঞ্জন দত্তের ছেলে নীল সুমনের একটি ইংরেজি গান গাইলেন । ফসিল‌্‌সের রূপম তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ইন্টেলেকচুয়াল ভঙ্গিতে সুমনের রংপেনসিল গানটির অন্য রূপ তুলে ধরলেন । শ্রীকান্ত, লোপামুদ্রা নিজেদের পেশাদারী দক্ষতা বজায় রাখলেন । ব্রহ্ম ব্যান্ডের গান আমি আগে শুনিনি । এই ব্যান্ডের একটি মেয়ে সুমনের পেটকাটি চাঁদিয়াল গানটি সম্পূর্ণ অন্য কায়দায় গাইলেন ।
জয় গোস্বামী কবিতাপাঠ করলেন । অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি প্রায় পুরো অনুষ্ঠানটিই দেখলেন । তবে পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক জগতের আমরা ওরা ভাগাভাগির পর 'আমাদের দলের' কাউকে তেমন চোখে পড়ল না ।
তবে চোখে লাগল এই অনুষ্ঠানে সুমনের গানের বড় ভক্ত নচিকেতার না থাকাটা । কেন জানিনা মনে হল নচিকেতা থাকলে অনুষ্ঠানটি আরো স্বয়ংসম্পূর্ণ হত ।
সুমন নিজে কোন গান পুরো গাইলেন না তবে অনেক গানেই গলা মেলালেন । অনবদ্য একটি অনুষ্ঠান উপহার দেবার জন্য কলকাতা টিভিকে ধন্যবাদ ।

Sunday, March 16, 2008

হারবার্ট

হারবার্ট সিনেমাটির ভিসিডি কেনার মাত্র কয়েকদিন আগেই আমি জানতে পেরেছিলাম যে নবারুণ ভট্টাচার্যের রচিত এই উপন্যাসের উপর সুমন মুখোপাধ্যায় একটি ছবি তৈরি করেছেন এছাড়া ছবিটি সম্পর্কে আমার কাছে আর কোনো তথ্য ছিল না

ছবিটি দেখার পরে অনেকটাই স্তম্ভিত হয়ে গেলাম বাংলা ভাষায় এই রকমের ছবি আগে কখনও দেখেছি বলে মনে করতে পারলাম না থিয়েটার জগতের এক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব সুমন মুখোপাধ্যায় তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবিতেই যে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখলেন তা মনে রাখার মতো তবে ছবিটি বাংলা ভাষায় নির্মিত আরো অনেক সমান্তরাল ছবির মতো ছিল ফ্লপ

এর কারণ কি সুমন মুখোপাধ্যায়ের নাম চিত্রপরিচালক হিসাবে মানুষের কাছে অজানা ছিল বলে নাকি ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে শুভাশিষ মুখোপাধ্যায় যাঁর স্টার ভ্যালু কম এখন তো বাংলা সমান্তরাল সিনেমাতেও বড় বড় স্টারদের নামনো হয় লোক টানার জন্য যেখানে আমাদের এখানের অনেক নামহীন অভিনেতাই তার থেকে ভাল অভিনয় করতে সক্ষম

কিছুদিন আগে ফেলিনির লা স্ট্রাডা ছবি সম্পর্কে লিখতে গিয়ে বলেছিলাম কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা কেনই বা জন্মায় আর কেনই বা মরে যায় সে নিয়ে কারো মাথাব্যথা থাকে না হারবার্ট সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র হারবার্ট সরকার এই রকম একটি চরিত্র তার জীবনটা হতে পারত খুবই উঁচুদরের তার বাবা ছিল একজন সেলিব্রিটি চিত্রপরিচালক যার স্বভাবতই নায়িকাদের সঙ্গে ফস্টি নস্টি করার প্রবণতা ছিল কিন্তু শুটিং-এ গিয়ে সে বেঘোরে প্রাণ দিল এরকিছুদিন পরেই তার মা কাপড় মেলতে গিয়ে ছাদে কারেন্ট খেয়ে মারা গেল এর পর হারবার্ট জ্যাঠা জেঠিমার সংসারে লাঠি ঝ্যাঁটা খেয়ে বড় হতে লাগল শেষ পর্যন্ত সে হয়ে উঠল একজন প্রেত বিশেষজ্ঞ এরপর যুক্তিবাদী সমিতির হুমকি পেয়ে সে আত্মহত্যা করে

সিনেমাটিতে প্রচুর রূপক দৃশ্য ও ভাবনা আছে উত্তর কলকাতার সরু গলি আর উঁচুনিচু বাড়ির ল্যান্ডস্কেপ পুরনো বনেদী বাড়ির একতলার অন্ধকার ঘর সবই এক অদ্ভুত পরিবেশ রচনা করে জানলার ভিতর দিয়ে দেখা কাস্তে হাতুড়ি তারা, মৃত বাবা মার মুভি ক্যামেরার পিছনে দাঁড়িয়ে ছেলের কীর্তিকলাপ দেখা সবই কিছু ইঙ্গিত হিসাবে আমাদের চোখে ধরা পড়ে

ছবিটির গল্প শুধু অনুসরণ করলে ছবিটিকে বুঝে নিতে অসুবিধা হবে অনেক কথাই এখানে বলা হয়েছে পরোক্ষ ভাবে সত্তরের দশকের নকশাল আন্দোলন ছবিটির অন্যতম প্রেক্ষাপট সেই আন্দোলনের চেতনা যে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় নি যেকোন মূহুর্তেই তা আবার ফেটে পড়তে পারে তা বোঝানো হয়েছে ছবিটির পিছনে গভীর রাজনৈতিক বক্তব্য আছে
ছবিটি কখনই একমাত্রিক বা লিনিয়ার নয় বরং বহুমাত্রিক সময়ের তিনটি আলাদা আলাদা স্তর কে পাশাপাশি ধরা হয়েছে এবং এই কাজটি পরিচালক অত্যন্ত দক্ষতার সাথে করেছেন আলো-ছায়া উঁচুনিচু সবই এখানে প্রতীক হারবার্টের কৈশোর এবং যৌবন, বর্তমান হারবার্ট এবং তার আত্মহত্যা করার পর আপাত রহস্য এবং পুলিশের তদন্ত সবই পাশাপাশি দেখানো হয়েছে

সুমন মুখোপাধ্যায় যে বহু নামকরা চিত্র পরিচালকের কাজ থেকে প্রভাবিত হয়েছেন তা সহজেই বোঝা যায় ফেলিনির প্রভাব
তাঁর কাজে ভালোই পড়েছে ছাদের উপরে কিশোর হারবার্টের হস্তমৈথুন করার দৃশ্যটি দেখে ফেলিনির অ্যমারকর্ড ছবিটির কথা মনে পড়ে যায় কিন্তু একথা স্বীকার করতেই হবে যে প্রভাবিত হয়েও তিনি চিত্রপরিচালক হিসাবে নিজের একটি জায়গা গঠন করতে সক্ষম হয়েছেন ছবিটিতে বেশ কিছু গালাগালি রয়েছে যা কিছু মানুষের অস্বস্তির কারণ হতে পারে কিন্তু আমার মনে হয়ে সিনেমাটিতে এগুলি ছাড়া চরিত্রগুলিকে পুরোপুরি বোঝানো যেত না

দৃশ্যনির্মান সম্পাদনা সংলাপ ক্যামেরা এবং পরিচালনা সবই অসাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও মনে রাখার মত হারবার্ট এর চরিত্রে শুভাশিষ মুখোপাধ্যায় এছাড়া লিলি চক্রবর্তী, সব্যসাচী চক্রবর্তী, ব্রাত্য বসু, সবাই ভালো অভিনয় করেছেন তবে কিছু কিছু জায়গায় অভিনয় একটু লাউড মনে হয় পরিচালক ইচ্ছাকৃত ভাবেই এটা করেছেন অথবা থিয়েটার অভিনয়ের লাউডনেস এই ছবিতেও একটু এসে ঢুকেছে

ছবিটি দেখার পর নবারুণ ভট্টাচার্যের মূল উপন্যাসটি পড়ার ইচ্ছা খুব বেড়ে গেল মূল উপন্যাসটি সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার প্রাপ্ত বিজন ভট্টাচার্য এবং মহাশ্বেতা দেবীর সুযোগ্য সন্তান নবারুন নিজেও কতটা প্রতিভাশালী লেখক তার বোঝার জন্য বইটি পড়তেই হবে

যাঁরা একটু অন্য ধরণের সিনেমা দেখতে ভালবাসেন তাঁদের দেখতেই হবে এই ছবি ভারতে মোজার বায়ার কম্পানি এই ছবির ভিসিডি বের করেছে দুটি সিডির সিনেমার দাম মাত্র তিরিশ টাকা


Monday, February 11, 2008

বাংলা উইকিপিডিয়া -- পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের বলছি

আমরা কথায় কথায় বলি যে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বসবাস করছি । আর পশ্চিমবঙ্গ যে এই তথ্যপ্রযুক্তিতে ক্রমাগত এগিয়ে চলছে তাও আমরা বুঝতে এবং দেখতে পারছি বিভিন্ন মিডিয়াতে । এবং আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতাতেও ।

কিন্তু এই তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধাকে সমস্ত স্তরের মানুষদের কাছে পৌছে দিতে হবে । আর সেটা করা সম্ভব কম্পিউটারে মাতৃভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে । গ্রামে গ্রামে শুধু কম্পিউটার আর ইন্টারনেট পৌছে দিলেই হবে না । ইন্টারনেটে যদি বাংলা ভাষায় পড়ার মত উপযুক্ত বিষয় না থাকে তাহলে কখনই আমাদের তথ্যপ্রযুক্তিকে সর্বস্তরে পৌছে দেওয়ার স্বপ্ন সফল হবে না । তাই বাংলার সাধারন মানুষের হাতে পৌছে দিতে হবে জগতের সব তথ্য । আমাদেরই মাতৃভাষায় - বাংলা ভাষায় ।

ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান, দর্শনশাস্ত্র, ভাষাবিজ্ঞান, গণিত, প্রভৃতি বিষয়ের সঙ্কলন হল বিশ্বকোষ । অর্থাৎ বিশ্বকোষ এমন একটি জিনিস যাতে সমস্ত কিছুর উপরেই তথ্য পাওয়া যেতে পারে । কিন্তু বাংলায় লেখা আধুনিক এবং সম্পূর্ণ বিশ্বকোষের অভাব রয়েছে । আর তার দামও বিশাল । অধিকাংশ মানুষের পক্ষেই তা কেনা সম্ভব নয় । আর এই বাংলা বিশ্বকোষের বদলে পড়া যেতে পারে ইংরাজি বিশ্বকোষ যেমন এনকার্টা, বা ব্রিটানিকা । এখন যাঁদের ইংরাজি জ্ঞান কম তাঁদের পক্ষে এগুলি পড়া সম্ভব নয় । আর ইংল্যান্ড বা আমেরিকা থেকে প্রকাশিত হওয়ার জন্য এগুলিতে ভারতীয় বা বাংলার বিষয় কম থাকে । বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সম্পর্কে যদি আপনার আগ্রহ থাকে তাহলে ব্রিটানিকা বা এনকার্টা থেকে আপনি বেশি তথ্য পাবেন না ।
আর ভারত বা বাংলার বিষয়গুলি এই বিদেশি বিশ্বকোষগুলিতে লেখা হয় বিদেশী দৃষ্টিকোন থেকে সেগুলি পড়ে আমাদের যদি নিজেদের সংস্কৃতি, সাহিত্য, সঙ্গীত, ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হয় তার থেকে দুঃখজনক আর কিছু নেই ।

অনেকেই হয়ত অবগত আছেন ইংরাজি উইকিপিডিয়া সম্পর্কে । এটি পৃথিবীর সবথেকে বড় উইকিপিডিয়া । কিন্তু অনেকে হয়ত জানেন না যে উইকিপিডিয়ার একটি বাংলা সংস্করণও আছে । ইন্টারনেটে বাংলা বিশ্বকোষ বাংলা উইকিপিডিয়া (bn.wikipedia.org) লেখার কাজ চলেছে প্রায় বছর দুই ধরে । এর মধ্যেই সতেরো হাজারেরও বেশি নিবন্ধ তৈরি করা হয়েছে । কিন্তু এই নিবন্ধের অনেকগুলিই রয়েছে প্রাথমিক অবস্থায় । তাই এই নিবন্ধগুলিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য দরকার স্বেচ্ছাসেবকের । এরমধ্যেই বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ এগিয়ে এসেছেন । কিন্তু খুবই দুঃখের বিষয় এই যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা নামমাত্র । আমারা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের আমাদের রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতি নিয়ে খুবই গর্ব করি বটে কিন্তু বাংলা উইকিপিডিয়ার ব্যাপারে আমরা খুবই পিছিয়ে আছি ।

বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বিষয় নিয়ে লেখা সম্ভব নয় । বলুন তো কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের উপর নিবন্ধ লিখতে গেলে তো এরকম মানুষকেই প্রয়োজন যাঁর এখানে নিয়মিত যাতায়াত আছে । অথবা কলকাতা বইমেলা নিয়ে লিখতে গেল এরকম মানুষ প্রয়োজন যিনি এখানে ঘুরে বেড়িয়েছেন । আর বাংলা উইকিপিডিয়াতে লিখতে গেলে কোন বিশেষজ্ঞ হবার প্রয়োজন নেই । আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা বা বয়েস কোনটাই বিচারযোগ্য নয় । শুধু ইচ্ছেটাই এখানে বড় কথা । সমস্ত কাজের মধ্যেও আপনি যদি রোজ মাত্র একলাইন করেও বাংলা উইকিপিডিয়ায় লেখেন তাহলেও বছরে ৩৬৫ লাইন লেখা হয় । আর অনেকে যদি অল্প অল্প লেখেন তাহলে এই বিন্দু বিন্দু করেই আমরা সবাই মালিক হতে পারি এক বিরাট বাংলা বিশ্বকোষের । আর যদি আপনার মনে হয় যে কোন বিষয়েই জ্ঞান নেই (যেটা আসলে ভুল) তা হলেও আপনি বাংলা উইকিপিডিয়ায় আপনার অবদান রাখতে পারেন ইংরাজি উইকিপিডিয়া থেকে নিবন্ধ অনুবাদ করে বা বানান এবং ব্যকরনগত সমস্যা দূর করে ।

বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবকেরা যদি বাংলা উইকিপিডিয়ার উন্নতিতে এগিয়ে আসতে পারেন তাহলে আমরাই বা কেন পিছিয়ে থাকব? তাই আসুন আমরা গঠনমূলক এই প্রজেক্টে অংশগ্রহন করে আমাদের ভবিষ্যৎ সমাজের হাতে তুলে দিই বাংলা ভাষায় এক চমৎকার বিশ্বকোষ ।

Saturday, February 09, 2008

ফেডেরিকো ফেলিনির লা স্ট্রাডা

সমাজের কিছু প্রান্তিক মানুষ থাকে যারা কেনই বা জন্মায় আর কেনই বা মরে যায় তা নিয়ে কারোর কোনো মাথাব্যথা থাকে না । তাদের সুখ দুঃখ চিন্তা ভাবনা চাপা পড়ে যায় সময়ের সাথে সাথে । এরকম দুজন প্রান্তিক মানুষের প্রেমকাহিনী নিয়ে ফেলিনির লা স্ট্রাডা ।

ফেলিনির আগের যে সমস্ত ছবি দেখেছিলাম যেমন আই ভিতেলোনি (I vitelloni ), এইট অ্যান্ড হাফ, অ্যমারকর্ড সেগুলি বেশিরভাগই ছিল আত্মজীবনী মূলক । সেদিক থেকে লা স্ট্রাডা বেশ আলাদা ।

ইটালির উপকূলের এক গরীব পরিবারের মেয়ে জেলসোমিনা । তাকে তার মা অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে বেচে দেয় সার্কাসে খেলা দেখানো জ্যামপানোর কাছে । জ্যামপানো খুবই কড়া ধাঁচের বদরাগী লোক । সে একটা মোটরবাইক কাম ভ্যান নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খেলা দেখিয়ে বেড়ায় । জ্যামপানো জেলসোমিনাকে অল্প ট্রেনিং দিয়ে তার খেলা দেখানোর সহকারী হিসাবে লাগায় । জেলসোমিনার আচার আচরন ছিল ঠিক একটা ক্লাউনের মত । ছোট ছোট করে ছাঁটা চুলে তাকে মেয়ে বলেই মনে হত না । আর সিনেমার নায়িকাসুলভ কোন গুনই জেলসোমিনার ছিল না । জ্যামপানোর হাজার দোষ সত্ত্বেও জেলসোমিনার তাকে ভাল লাগতে থাকে ।

জ্যামপানোর আচার আচরন এবং নারীসঙ্গে বিরক্ত হয়ে সে একবার পালিয়ে যায় । কিন্তু জ্যামপানো আবার তাকে ধরে আনে । এর মধ্যেই তাদের সাথে দেখা হয় সার্কাসে ব্যালান্সের খেলা দেখানো 'দ্য ফুল' এর সাথে । দ্য ফুলের সাথে জ্যামপানোর আগে থেকেই শত্রুতা ছিল । একবার ছুরি নিয়ে দ্য ফুলকে মারতে গিয়ে জ্যামপানো পুলিশের হাতে ধরা পড়ে । সেই সময় জেলসোমিনা খুব সহজেই চলে যেতে পারত । কিন্তু সে যায় না । জ্যামপানো ছাড়া পেতেই সে আবার ফিরে যায় ।

এরপর একসময় রাস্তায় আবার জ্যামপানো আর দ্য ফুল মুখোমুখি হয় । দুজনের মারামারিতে দ্য ফুল আহত হয় আর মারা যায় । এই ঘটনায় জেলসোমিনা খুবই আঘাত পায় আর মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে । তাকে এই অবস্থায় দেখে জ্যামপানো নিজের ভুল বুঝতে পারে আর জেলসোমিনাকে একজায়গায় রেখে চলে যায় ।
বেশ কিছু বছর পরে জ্যামপানো জানতে পারে যে এর কিছুদিন পরেই জেলসোমিনা মারা গিয়েছিল । সিনেমার শেষ দৃশ্যে দেখা যায় জ্যামপানোকে রাতের অন্ধকার সমুদ্রের ধারে কাঁদতে ।

অসাধারন এই সিনেমার মূল আকর্ষন হচ্ছে জ্যামপানোর ভূমিকায় অ্যান্টনি কুইন আর জেলসোমিনার ভূমিকায় জিউলিয়েতা ম্যাসিনার অভিনয় । সম্ভবত অ্যান্টনি কুইন তাঁর জীবনের সেরা অভিনয় করেছেন এই ছবিতে । আর জিউলিয়েতা ম্যাসিনার অভিনয় সম্পর্কে বেশি কিছু না বলাই ভালো । মুখের এক্সপ্রেসন বদলাতে তাঁর জুড়ি নেই । চরিত্রের একেবার ভিতরে ঢুকে কিভাবে তাকে জীবন্ত করে তুলতে হয় তার তুলনা বোধহয় আর পাওয়া যাবে না । চরিত্রটির সরলতা, দুঃখ, আনন্দ, কষ্ট সবই তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন অনবদ্য ভাবে ।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে জিউলিয়েতা ম্যাসিনা হলেন ফেলিনির স্ত্রী । তাঁরা এর আগে ও পরে বহু ছবিতে একসাথে কাজ করেছেন । ছবিটির নেপথ্যসঙ্গীতও মনে রাখার মত ।
১৯৫৬ সালে সেরা বিদেশী ছবির জন্য এটি অস্কার পুরষ্কার পেয়েছিল ।

Saturday, January 26, 2008

গুগল বই সমাচার

বেশ কিছুদিন ধরেই গুগল বই এর সাইটটি (books.google.com) আমার নজরে এসেছিল । প্রথমে একটু নিরাশই হয়েছিলাম কেননা এতে কোনো বইয়ের পুরোটা দেখা যাচ্ছিল না কেবল অংশবিশেষ দেখা যাচ্ছিল । তারপর একটু ভাল করে নজর করে দেখলাম যে ফুল ভিউ লিংকে গেলে যে বইগুলি দেখা যায় তার বেশিরভাগই ফ্রিতে দেখা আর ডাউনলোড করা যাচ্ছে পিডিএফ ফরম্যাটে ।

একটু সার্চ করতেই খুঁজে পেলাম আদ্যিকালের দুষ্প্রাপ্য সমস্ত বইয়ের স্ক্যান করা কপি । আমার প্রিয় বিষয় ইতিহাস । তাই ভারত ও বাংলার ইতিহাসের বই প্রথমেই খুঁজে দেখলাম । পেলাম দারুণ দারুন সমস্ত বই । বেশিরভাগ বই ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভারতে আগত ব্রিটিশ সরকারী কর্মচারী বা মিশনারীদের লেখা । সেসময়ের ভারতের নানা রকমের ভ্রমনের কাহিনী, সিপাহী বিদ্রোহের রোমাঞ্চকর বর্ণনা, সতীদাহের চাক্ষুষ বর্ণনা বাদ যায় নি কিছুই । খুব আকর্ষনীয় বিষয়ের মধ্যে রয়েছে স্লিম্যান সাহেবের লেখা ভারতীয় ঠগী আর ফাঁসুড়েদের উপর বই । আর একজন মহিলার লেখা বইতে রয়েছে কিভাবে ১৮০২ সালে তিনি জলপথে কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদ গিয়ে মীরজাফরের স্ত্রী মুন্নি বেগমের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তার বর্ণনা । খুঁজতে খুঁজতে পেলাম একেবারে প্রথম যুগের বাংলা থেকে ইংরাজি ডিকশনারি যা ছাপা হয়েছিল শ্রীরামপুরে ।

গুগল বইয়ের একটা ভাল দিক হচ্ছে এখানে আসল বই থেকে স্ক্যান করা পাতাগুলি দেখা যায় । তবে স্ক্যান করা হলেও বই গুলি সার্চযোগ্য । কারন স্ক্যান করা বইয়ের পাতার ছবিগুলির সাথে ওসিআর করা টেক্সটও রাখা আছে । কিন্তু স্ক্যানের কোয়ালিটি নিয়ে অনেক সময়েই প্রশ্ন উঠতে পারে । কিছু কিছু বই খুব বাজে ভাবে স্ক্যান করা হয়েছে । পাতা কেটে বেরিয়ে গেছে এরকম ব্যাপারও আমার চোখে এসেছে ।

পুরনো বই খুঁজতে খুঁজতে একটা ব্যাপার আমার নজরে এসেছিল সেটা হচ্ছে ফ্রি ডাউনলোডের জন্য যে বইগুলি দেওয়া হচ্ছে সেগুলি সবই ১৮৪০-৫০ এর সময়কার বা তার আগের কিন্তু এই সময়ের পরের বইগুলি যেগুলির উপরে কপিরাইট নেই যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বই সেগুলি কিন্তু ফ্রিতে ডাউনলোডের জন্য পাওয়া যাচ্ছে না ।
আমেরিকার কপিরাইট আইন ঘেঁটে দেখলুম যে ১৯২৩ সালের আগে প্রকাশিত সব বই পাবলিক ডোমেনে চলে গেছে মানে তাদের উপরে আর কপিরাইট নেই । কিন্তু বই তো ১৮৪০-৫০এর পরে প্রকাশিত হলে ফ্রিতে ডাউনলোড দিচ্ছে না । ব্যাপারটা কি ?

নেটে একটু খোঁজখবর করে দেখতে পেলাম যে ব্যবহারকারী যদি আমেরিকার বাইরে থেকে গুগল বই ব্যবহার করে তবে সে ১৮৬৫ সালের পরের কোন বই ফ্রী তে ডাউনলোড করতে পারবে না । কিন্তু সে যদি আমেরিকার ভিতর থেকে গুগল বই ব্যবহার করে তাহলে ১৯২৩ সাল পর্যন্ত সমস্ত বই ফ্রিতে ডাউনলোড করতে পারবে । একটা প্রক্সি সার্ভার ব্যবহার করে দেখলাম ঠিক তাই । সাধারণ ভাবে রবীন্দ্রনাথের লেখা কোন বই ফ্রিতে ডাউনলোড করতে দিচ্ছে না কিন্তু প্রক্সি সার্ভার ব্যবহার করে গুগল বই খুললে তখন রবীন্দ্রনাথের ১৯২৩ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত সব বই ডাউনলোড করা যাচ্ছে । বিভিন্ন দেশের কপিরাইট আইন বিভিন্ন রকম হওয়ার জন্য গুগলের পক্ষে সত্যিই ট্র্যাক রাখা কঠিন কোন বইয়ের কোন দেশে কপিরাইট আছে আর কোন দেশে নেই । যেমন ভারতের কপিরাইট আইনে লেখকের মারা যাওয়ার পর ৬০ বছর পর্যন্ত কপিরাইট বলবৎ থাকে । আবার কোন কোন দেশে এই আইন ৭০ থেকে ১০০ বছর পর্যন্তও হয়ে থাকে । তাই যে বই আমেরিকায় পাবলিক ডোমেনে চলে গেছে সেই বই হয়তো ভারতে কপিরাইটের আওতায় আছে ।

তাই গুগলের বিশেষ কিছু করার ছিল না কোন লেখক কবে মারা গেছে আর কোন দেশে সেই অনুযায়ী কপিরাইট আছে কি নেই তার ট্র্যাক রেখে সেই অনুযায়ী সেই দেশের আই পি দেখে ডাউনলোডের অনুমতি দিতে গেলে তারা পাগল হয়ে যাবে । তাই আমেরিকার বাইরের সবাইকে ১৮৬৫ সাল অবধি প্রকাশিত বই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে ।

আমি প্রক্সি সার্ভার দিয়ে বই ডাউনলোড করার চেষ্টা করে দেখলাম ডাউনলোড হচ্ছে কিন্তু স্পিড স্লো । আর ডাউনলোড কোন ভাবে আটকে গেলে তাকে আবার প্রথম থেকে চালু করতে হচ্ছে । যেটা সাধারণভাবে ডাউনলোড করতে গেলে করতে হয় না ।

গুগল সত্যিই আমাদের সামনে এক বিরাট সুযোগ এনে দিয়েছে দুষ্প্রাপ্য বইগুলি দেখার ও পড়ার । কিন্তু এই কপিরাইটের কচকচিতে তার অনেকটাই বানচাল হতে চলেছে । তাই কেউ যদি গুগল বই থেকে অন্তত ১৯২৩ সাল পর্যন্ত বইগুলি আমেরিকার বাইরে ডাউনলোডের সহজ পদ্ধতি জানান তাহলে খুবই কৃতজ্ঞ থাকব ।