কিল আইই সিক্স
একজন ওয়েব ডিজাইনার হিসাবে সবথেকে যন্ত্রনা হল ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৬ তে ওয়েবসাইট ঠিকঠাক বানানো । একা এই ব্রাউজারটি যে ইন্টারনেটকে কতটা পিছনে টেনে রাখছে সেকথা আর বলার নয় । কখনো কখনো রাগে চুল ছিঁড়তে ইচ্ছা করে এই দেখে যে আমার ডিজাইন করা সাইট এইচটিএমএল, সিএসএস লেআউট বানানোর পর সব ব্রাউজারে ভালো ভাবে চলছে কিন্তু আইই ৬তে খোলার পরেই নানা রকমের গণ্ডোগোল চোখে পড়ছে । আর সেগুলিকে ঠিক ঠাক করতে কত ঘন্টা কাজ যে বেশি করতে হচ্ছে তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই ।
নানা রকম বাগে ভরা এই বাজে অথচ চরম জনপ্রিয় সফটওয়্যারটি এখনও সারা পৃথিবীতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষই ব্যবহার করেন । তাই একে উপেক্ষা করা সম্ভব নয় । সাইট বানানো হলে সেটা ফায়ারফক্স, অপেরা, সাফারি, গুগুল ক্রোম প্রভৃতি সব ব্রাউজারেই টেস্ট করা হয় । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোন সমস্যা হলে সেগুলি এই ব্রাউজারগুলিতে ধরা পড়ে । কিন্তু আইই ৬ তে যে সমস্যা গুলি তৈরি হয় তার বেশির ভাগই অন্য কোন ব্রাউজারে হয় না । এই সমস্যাগুলির কারন হচ্ছে কোডের মধ্যে বাগ আর কিছু কিছু ব্যাপারে মাইক্রোসফটের একগুঁয়েমি । আইই ৬ এর বেশ কিছু সমস্যা আইই ৭ এ ঠিক করা হয়েছে কিন্তু মুশকিল হল অনেকই আইই ৬ থেকে ৭ এ আপগ্রেড করেন না । আর আরো একটা মুশকিল হল উইনডোজ এক্সপির ডিফল্ট ব্রাউজার হল আইই ৬ । তাই যখনই কেউ কম্পিউটারে নতুন করে উইনডোজ এক্সপি লোড করেন তখনই আবার আইই ৬ ইন্সস্টল হয়ে যায় ।
আইই ৬তে ট্যাব ব্রাউজিং সহ আধুনিক ইন্টারনেট সার্ফিঙের কোন সুযোগসুবিধাই নেই বললে চলে । তার উপর খুব সাধারন কয়েকটি বৈশিষ্ট্য যেমন সেমি ট্রান্সপারেন্ট পিএনজি ছবির ব্যবহার করা যায় না । (আইই ৬তে সেমি ট্রান্সপারেন্ট পিএনজি ব্যবহার করা সম্ভব । কিন্তু তার জন্য অনেক জটিল পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় যার কিছু নিজস্ব অসুবিধা আছে । ) অথচ অনেক ছোট কম্পানির ব্রাউজারগুলিতে এই সুযোগ সুবিধা অনেকদিন থেকেই আছে । উইনডোজ এক্সপি বেরিয়েছিল ২০০১ সালের অক্টোবরে তার মানে আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগে । এই সাত বছর আগের পুরনো একটা ফালতু ব্রাউজারকে কিছুতেই ঝেড়ে ফেলা যাচ্ছে না । এবং যতদিন উইনডোজ এক্সপির ব্যবহার থাকবে একে নিয়েই আমাদের চলতে হবে । কিন্তু যত তাড়াতাড়ি এই ব্রাউজারের মৃত্যু ঘটে ততই আমাদের পক্ষে মঙ্গল ।