Thursday, August 31, 2006

মেছো জোকস্ ২

ছোট ছেলেটি স্কুলে যেতে দেরি করেছে । চুপি চুপি ক্লাসে ঢুকতে গিয়েছিল সুপারিটেন্ডেন্টের নজর এড়িয়ে । কিন্তু ধরা পড়ে গেল । সুপার খপ করে তাকে ধরলেন এবং দেরির জবাবদিহি চাইলেন । আমতা আমতা করে সে জবাব দিল :
আমি আজ মাছ ধরতে যাব ঠিক করেছিলাম, কিন্তু বাবা যেতে দিল না ।
সুপারের মুখ মৃদু হাসিতে উদ্ভাসিত হল । -- বিচক্ষন পিতা তিনি বললেন । তোমাকে মাছ ধরতে যেতে না দিয়ে তিনি ঠিক কাজই করেছেন । কারণটাও তিনি নিশ্চই ব্যাখ্যা করেছেন তাই না ?
ছোট ছেলেটি জবাব দেয় – হ্যাঁ নিশ্চই স্যার ! তিনি বললেন, যা টোপ আছে, তাতে আমাদের দুজনের কুলোবে না !

মৎস্যশিকারীদের আড্ডায় অত্যন্ত বিমর্ষ হয়ে বসেছিল স্যাম । তা দেখে তার বন্ধু প্রশ্ন করল, কী দোস্ত ! আজ দেখছি মুড অফ ! নতুন করে কিছু হল না কি ?
আর বল কেন ? বউ আলটিমেটাম দিয়েছে, হয় বরাবরের মতো আমাকে মাছ ধরা ছাড়তে হবে, নইলে সে আমাকে বরাবরের মতো ছেড়ে চলে যাবে ! হায় ভগবান! এত ভাল বউটাকে আমি হারাতে চলেছি !

এই যে সেদিন মাছ ধরতে গেলে, বউকে ব্যাপারটা বোঝাতে কোনও সমস্যা হয়নি তো ?
হয়নি আবার ! সেদিনই সে আবিষ্কার করেছিল যে আদৌ আমি মাছ ধরতে যাইনি !

সমুদ্রতীরে মাছ ধরছেন এক দম্পতি । স্বামীর বঁড়শিতে টোপ গিলল এক বিশাল স্যামন মাছ । কিন্তু হুইল গুটিয়ে সেটাকে তীরে আনার আগেই সুতো-মাছ সব জড়িয়ে গেল সমুদ্র শৈবালের স্তুপে । স্বামী চিৎকার করে স্ত্রীকে বললেন :
ওগো জলদি কর ! ঝাঁপ দাও ! সাঁতরে চলে যাও ওই শ্যাওলাগুলোর কাছে ! ডুব দিয়ে সুতোটা ছাড়াও । নইলে হাঙরগুলো মাছটাকে টুকরো টুকরো করে ফেলবে !

মৎস্যশিকারীর প্রতিবেশী : এই যে রাম বাবু ! কাল না কি আপনারা কজন মিলে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন ? হেঁ হেঁ ! তা মেজো মাছটা কে ধরলেন ? হেঁ হেঁ !
মেজো মাছ ? সেটা আবার কি ?
হেঁ হেঁ ! মানে সবচেয়ে বড় মাছের পরেরটা । সবচেয়ে বড় মাছটা তো নির্ঘাৎ আপনিই ধরেছেন, হেঁ হেঁ ! তার পরের বড় মাছটা কে ধরলেন, সেটাই জানতে চাইছি ! হেঁ হেঁ !

Sunday, August 20, 2006

হোটেল জোকস্ ১

হোটেল ব্যবসায় ইদানিং এতই মন্দা চলছে যে হোটেল কর্তৃপক্ষ এখন অতিথিদের তোয়ালে চুরি করছেন ।

এমন আভিজাত্য কটা হোটেলে আছে ? যেসব লিফট বয় অতিথিদের উপরে নিয়ে যায় তাদের একরকম ইউনিফর্ম আবার যারা অতিথিদের নিচে নামিয়ে আনে, তাদের আলাদা ইউনিফর্ম ।

নতুন ফাইভ স্টার হোটেলটায় আমি চমৎকার একটা রুম আর বাথরুম পেয়েছিলাম । দুর্ভাগ্য, দুটো ছিল দুটো আলাদা বিল্ডিংয়ে ।

বিছানা এত শক্ত ছিল যে রাতে ঘুমোবার সময় দুবার আমাকে উঠতে হয়েছিল বিশ্রাম নেবার জন্য ।

দারুন অভিজাত হোটেল । কী বলব, লনড্রিতে পাঠাবার আগে জামাকাপড় কেচে পরিষ্কার করে নিতে হত ।

হ্যাঁ হোটেলে রানিং ওয়াটার পেয়েছিলাম । তবে কিনা সেই রানিং বন্ধ করা যায় নি ।

হ্যালো রুম সার্ভিস ? একটা তোয়ালে পাঠাতে পারেন ?
এক মিনিট স্যার ! একটাই তোয়ালে এই হোটেলে ! এই মূহুর্তে কেউ সেটা ব্যবহার করছেন ।

অতিথি : আপনাদের হোটেলের সাপ্তাহিক চার্জ কত ?
রিসেপশন : বলতে পারছি না ম্যাডাম ! আজ পর্যন্ত কেউ অতদিন থাকেনি এই হোটেলে ।

অতিথি : শুনেছি এ হোটেলে নাকি সব সময় ছাদের ফুটো দিয়ে জল পড়ে ?
রিসেপশন : মিথ্যা গুজব স্যার ! একমাত্র বৃষ্টির সময়েই অমনটা হয় ।

অতিথি : এই যে ৫২২ নম্বর ঘরটা দিয়েছেন, সেটায় তো কোন বাথরুম নেই । আমি তো একটা ঘর চেয়েছিলাম যেটা অ্যাটাচড বাথ হবে ।
রিসেপশন : দুঃখিত স্যার ! ঘর আর খালি নেই । তবে ৫২২ নম্বরটা কোনও ঘর নয় স্যার ! ওটা লিফট ।

রিসেপশন : বাইরের দিকের ঘর নেবেন, না ভেতরের দিকের ঘর, স্যার?
অতিথি : বাইরের দিকের । যে কোনও মূহুর্তে বৃষ্টি নামতে পারে ।

আপনি কি ওই হোটেলে অনেক সময় কাটিয়েছেন ?
না, খুব বেশী সময় নয় । ওদের রেট কত সেটা শোনার জন্য যেটুকু সময় লাগে !

অতিথি : আপনাদের হোটেলে গরম ও ঠান্ডা দুরকম জলের ব্যবস্থা আছে তো ?
রিসেপশন : হ্যাঁ স্যার । গ্রীষ্মে গরম আর শীতে ঠান্ডা ।

হোটেল ছেড়ে দিলেন কেন ?
কী বলব মশাই ! ওরা তিনটে মিল দেয় ঠিকই । তবে সোমবার ব্রেকফাস্ট, মঙ্গলবারে লাঞ্চ, আর বুধবারে সাপার !

রিসেপশন : শাওয়ার সহ একটা রুম দিই আপনাকে ?
অতিথি : আমার কিন্তু একটা বিছানার দরকার ছিল । আমি শাওয়ারে ঘুমোতে পারি না ।

অতিথি : ঘরে জলের ব্যবস্থা আছে তো ?
রিসেপশন : ছিল । কিন্তু মাস দুই আগে আমরা ছাদটা ঢালাই করতে পেরেছি !

Saturday, August 19, 2006

আমাদের অতীত

বাঙালি হিসাবে আমাদের অতীত যে খুব একটা উজ্জ্বল নয় সে কথা বলাই বাহুল্য । কখনো কখনো আমি যখন আমাদের অতীতের কথা ভাবি তখন আঁতকে উঠতে হয় । আজ থেকে মাত্র দেড়শো দুশো বছরে আগেই আমরা ছিলাম কুসংস্কারে ঢাকা অন্ধকারে আচ্ছন্ন । কারোর স্বামী মারা গেলে সেই শোকসন্তপ্ত বিধবাকে টেনে নিয়ে যাওয়া হত শ্মশানে স্বামীর চিতায় জ্বলে পুড়ে মরবার জন্য । যাতে তার বাস্তবজ্ঞান না থাকে সেজন্য তাকে আফিম জাতীয় মাদক খাওয়ানো হত । ঢাক ঢোল বাজিয়ে নানা রকম ভাবে শোভাযাত্রা করে সেই হতভাগ্য মহিলাকে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হত । তারপর তাকে স্বামীর জ্বলন্ত চিতায় পুড়িয়ে মারা হত । অনেক সময় আধপোড়া অবস্থায় সেই মহিলা বা অনেক সময় চোদ্দ পনের বছরের কিশোরী মেয়ে যখন চিতা থেকে উঠে পালাতে চাইত তখন তাকে বাঁশ দিয়ে ঠেসে দেওয়া হত চিতার মধ্যে । অনেক সময় পিটিয়ে হাত পা ভেঙে দেওয়া হত যাতে সে পালাতে না পারে । তার চিৎকার ঢাকা পড়ে যেত ঢাক ঢোলের শব্দে । আর এই ঘটনা সবাই ভিড় করে দেখতে আসত ।
তাও যারা চিতায় মরত মৃত্যুতে তাদের যন্ত্রনার অবসান হত কিন্তু যারা প্রানে বেঁচে থাকত তাদের আরো অবর্ণনীয় যন্ত্রনার মধ্যে দিন কাটাতে হত । হয়তো ধনী পরিবারের কন্যা বা বধূ হলেও তাদের চুল কেটে নেওয়া হত, পরনে থাকত খুবই সাধারন একটা সাদা কাপড়, তারা বিছানায় শুতে পেত না মাটিতে শুতে হত । বাচ্চা বাচ্চা মেয়েদেরও একাদশীর দিন একবিন্দু জলও খেতে দেওয়া হত না । কোনো সামাজিক কাজে তাদের যোগ দিতে দেওয়া হত না । অনেক সময় বিধবারা অসুস্থ হলে তাদের কোন ওষুধ পর্যন্ত দেওয়া হত না । আর তাদের এই অকাল বৈধব্যের জন্য তাদের বাবামাই দায়ী ছিল কারন বহু সময়েই বাচ্চা বাচ্চা মেয়েদের বয়েসে অনেক বড় বা বুড়ো লোকের সাথে বিয়ে দেওয়া হত । ফলে তাদের বৈধব্য অবশ্যম্ভাবী ছিল ।
মেয়েদের লেখাপড়া শেখানো হতো না । কারন লেখাপড়া শিখলে মেয়েরা নাকি বিধবা হয় এই ধারনা প্রচলিত ছিল । অথচ আমাদের মহাকাব্যে ও শাস্ত্রে কত শিক্ষিতা বিদুষী মেয়েদের কথা আছে ।
সধবা বাচ্চা মেয়েদেরও স্বামীর কাছে যৌন উৎপীড়নের শিকার হতে হত । পাঁচ বছরের বাচ্চা মেয়ে স্বামীর কাছে ধর্ষিতা হয়ে প্রান হারিয়েছে এরকম নজিরও আছে । বেশির ভাগ মেয়েরাই পনেরো বছরের মধ্যে দুটি থেকে তিনটি সন্তানের মা হয়ে যেত । শরীর অগঠিত হওয়ায় প্রচুর মেয়ের আঁতুরঘরে মৃত্যু ঘটত । তাতে অবশ্য কারোর কিছু এসে যেত না । সেই স্বামী বছর না ঘুরতেই আরেকটি বাচ্চা মেয়েকে ঘরে নিয়ে আসত ।
কুলীন ব্রাহ্মনেরা শত শত বিয়ে করত । কোথায় কবে বিয়ে করেছে তা ভুলে যাবে বলে মোটা জাবদা খাতায় তা লিখে রাখত । মাঝে মাঝে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে খালি টাকা নিয়ে আসত কিন্তু পরিবারের কোন দায়িত্ব নিত না । অনেক মেয়ে সারা জীবনে একবারও স্বামীর দর্শন পেত না । আর এই কুলীন ব্রাহ্মনের যখন মৃত্যু ঘটত তখন সমস্ত শ্বশুর বাড়িতে খবর দেওয়া একটা ঝকমারি ব্যাপার হত । একজনের মৃত্যুতেই আড়াইশো তিনশো মেয়ের জীবনে নেমে আসত চরম দুর্দিন । আবার অনেক সময় দুই তিন সতীন একই বাড়িতে বসবাস করত এবং স্বামীর অধিকার নিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে মরত ।
অনেক সময় বাবা মা শপথ করত তারা তাদের প্রথম সন্তান কে গঙ্গাসাগরে বিসর্জন দেবে । নিজের বাবা মার হাতেই সেই অসহায় শিশুটির জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটত বিনা কারনে এবং বিনা দোষে ।
গ্রামের দরিদ্র কৃষকেরা দিন কাটাত চরম কষ্টে । কারন জমিদারের লোকেরা মাত্রাতিরিক্ত খাজনা আদায় করত । বঙ্কিমচন্দ্রের দেবী চৌধুরানীতে আছে এই সমস্ত ঘটনার কিছু বিবরন । খাজনা দিতে না পারলে জমিদারের লোক কৃষককে বেঁধে রেখে চোখে পিঁপড়ে ছেড়ে দিত । নাভিতে পোকা ভরে বেঁধে রাখত । মেয়েদের স্তন কেটে নিত । এছাড়া পিটুনি গুমখুন তো ছিলই । জমিদারের আদেশে কৃষককে বেগার খাটতে হত জমিদারের বাড়িতে কোন প্রতিবাদ করা চলত না ।
ভাবুন তো আমরা যদি মাত্র দুশো বছর আগে এই পৃথিবীতে জন্মাতাম তাহলে আমাদের এইরকম পরিবেশে থাকতে হত । এখনও কেউ কেউ আছেন যাঁরা আমাদের অতীত নিয়ে গর্ব করেন । মনে দুই হাত দিয়ে তাদের কান টেনে ফাঁক করে চিৎকার করে এই অতীতের কাহিনী শোনাই যে কেমন গৌরবময় ছিল আমাদের অতীত ।
আজ আমাদের মধ্যে এই প্রথাগুলো না থাকলেও রয়ে গেছে তাদের কিছু ছায়া । যেমন বিভিন্ন রকমের সতীর মেলা বা মন্দির, বিধবাদের অম্বুবাচী, প্রভৃতি । আসুন এই শেষ স্মৃতি গুলিকেও আমরা টেনে ছুঁড়ে ফেলে দিই ।

Sunday, August 13, 2006

ইন্টারনেট এবং তার প্রভাব

মানব সভ্যতার উপর ইন্টারনেটের প্রভাব যে ক্রমশ আরো বিশাল হচ্ছে তাতে কোন সন্দেহ নেই । আস্তে আস্তে আমরা ক্রমশ ইন্টারনেটের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছি । আগামী দশ থেকে কুড়ি বছরের ভিতরে আরো যে কি কি পরিবর্তন হতে পারে তা ভাবলেও অবাক হতে হয় । আজ থেকে মাত্র দশ বছর আগেই অধিকাংশ বাড়িতে কোন টেলিফোন বা মোবাইল ফোন ছিল না । কেবল টিভি ছিল না, কম্পিউটার ছিল না এবং ছিল না ইন্টারনেট । ভাবতে অবাক লাগে যে মাত্র দশ বছরের ভিতরেই এত পরিবর্তন কিভাবে সম্ভব হল ।

আমার মনে হয়ে মানব সভ্যতার উপর ইন্টারনেটের একটা বিরাট প্রভাব পড়তে চলেছে । এই প্রভাব অন্য সমস্ত বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারকে ছাপিয়ে যাবে । ইন্টারনেট প্রচলিত হবার ফলে সবথকে সুবিধা হয়েছে এই যে একে ব্যবহার করে বহু দূরে বসবাসকারী মানুষেরাও একসাথে কাজ করতে পারেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন । এর ফলে বিভিন্ন গবেষনার উন্নতি আগের থেকে অনেক দ্রুতগতিতে হবে । ইন্টারনেট এটাও প্রমান করেছে যে মানুষ যে শুধু নিজের স্বার্থের জন্য কাজ করে এমন নয় । কারন ইন্টারনেটে বহু বিষয় ফ্রীতে পাওয়া যায় । তা সে আইনী ভাবেই হোক আর বেআইনী ভাবেই হোক । আমি আগে বইমেলায় গিয়ে বড় বড় বিদেশি প্রকাশকদের যে প্রচন্ড দামী বই গুলো হাতে নিয়ে উলটে পালটে দেখে আবার শেলফে রেখে দিতে বাধ্য হতাম এখন অনেক বইই আমি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে দেখতে ও পড়তে পারি । যে সমস্ত সিডির দাম দেখে আঁতকে উঠতাম সেগুলোর এমপিথ্রি ভার্সন ডাউনলোড করে শুনতে পারি । অনেকে হয়তো বলবেন এগুলো বেআইনী কাজ কিন্তু সেই সাথে এটাও স্বীকার করতে হবে যে এই পাইরেসি কিছুটা হলেও সাধারন মানুষের সাথে বড়লোকদের মধ্যে ব্যবধান কমাচ্ছে । দামি বই আর দামি গান এখন শুধু পয়সাওলা লোকেদের সম্পত্তি নয় । বড় বড় কোম্পানি গুলো একদিকে যেমন চেঁচাচ্ছে যে পাইরেসি বন্ধ হওয়া উচিত আবার তারাই এমপিথ্রী প্লেয়ার ডিভিএক্স প্লেয়ার এবং আইপড বিক্রি করছে । একটা আইপডে দশ হাজারেরও বেশী গান ধরে । এই কোম্পানি গুলো কি ভাবে যে তাদের কাস্টমাররা দশ হাজার গান আইনী পথে সংগ্রহ করবে ।

ইন্টারনেটের আরেকটি বিষয় হল পর্নোগ্রাফি । ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফির রমরমা দেখে অনেকে গেল গেল রব তুলেছেন । কিন্তু আমার মতে এ নিয়ে এত মাথা ঘামাবার কিছু নেই । সেই সৃষ্টির আদি যুগ থেকেই পর্নোগ্রাফি ছিল আছে এবং থাকবে । এই পর্নোগ্রাফি দেখে কেউ যদি আনন্দ পান তাতে ক্ষতি কি ? পর্নোগ্রাফি দেখে মানুষের চারিত্রিক অবনতি ঘটে এসব একেবার বাজে কথা । তবে কাউকে দিয়ে জোর করে পর্নোগ্রাফি তোলা এবং শিশু পর্নোগ্রাফির অবশ্যই বিরোধিতা হওয়া উচিত । আপনি পর্নোগ্রাফি দেখবেন কি দেখবেন না সেটা একেবারে সকাল বেলায় মুড়ি খাবেন না পাঁউরুটি খাবেনের মতই ব্যক্তিগত ব্যাপার । আসলে মানুষের যৌন আচরনের উপর ধর্ম এবং রাষ্ট্র বরাবরই প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছে । ইন্টারনেটের কল্যানে তাদের এই জারিজুরি আর খাটে না । তাই তারা পর্নোগ্রাফিকে আক্রমন করে । আর ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফির যেরকম রমরমা তাতে এটা স্পষ্টই বোঝা যায় যে ইন্টারনেট ব্যবহার কারী প্রচুর মানুষই এই পর্নোগ্রাফি সাইটগুলো দেখেন তা তারা মুখে যাই বলুন না কেন । এদিক দিয়ে বাঙালি রাও পিছিয়ে নেই । বর্তমানে যৌবনজ্বালা ডট কম পর্নআড্ডা ডট কম এবং পর্নবাংলা ডট নেটের মত বাঙালীদের পর্নো ফোরামে একবার ঢুঁ মারলেই দেখা যায় কত লোক নাম ভাঁড়িয়ে তাতে যোগদান করেছেন । এই মানুষেররা কারা এরা আমার আপনার মতই সাধারন স্বাভাবিক মানুষ । হয়তো তাঁরা স্বনামে যখন ব্লগ লেখেন সেখানে পর্নোগ্রাফির খুব নিন্দামন্দ করেন ।

বছর দশেক পরে আমার মনে হয় এসটিডি আইএসডি ফোন কলের আর কোন অস্তিত্ব থাকবে না । সমস্ত ফোনই হবে ইন্টারনেট মারফত । স্যাটেলাইট টেলিভিশনেরও আর কোনো দরকার হবে না । কারন ইন্টারনেটেই কয়েক লক্ষ টিভি চ্যানেল আর রেডিও দেখা আর শোনা যাবে । অফিসে রোজ না গিয়ে বাড়ি থেকে কাজ করার প্রবনতা বাড়বে । তাতে সময় ও বাঁচবে । সাধারন ব্যবহারের বেশিরভাগ সফটওয়্যার এবং অপারেটিং সিস্টেম হবে ওপেন সোর্স । হাতে লেখা খুবই কমে আসবে সমস্ত অফিসেই বাংলা আর ইংরাজী কম্পিউটারেই টাইপ করা হবে । বেশীরভাগ গল্প ও উপন্যাস লেখক কম্পিউটারেই সরাসরি টাইপ করবেন । কলমের বিক্রি কমে আসবে । বইয়ের বদলে ছোট ছোট ট্যাবলেট কম্পিউটার ব্যবহার হবে । যা হাতে ধরে বইয়ের মত পড়া যাবে । এর ফলে কাগজের ব্যবহার কমবে তাতে পরিবেশ কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে । কিন্তু ইলেকট্রনিক বর্জের পরিমান বাড়বে । শহর থেকে দূরের ছাত্রছাত্রদের মধ্যে যদি কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ানো যায় তবে গ্রাম এবং শহরের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মানের পার্থক্য অনেক কমবে । আর সবথেকে বড়কথা সবদিক থেকেই আমারা ইন্টারনেটের উপর এত নির্ভরশীল হয়ে পড়ব যে এটা সাধারন মানুষের জীবনযাত্রার এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠবে ।

Wednesday, August 02, 2006

বাংলা লেখার সময় ইউনিকোড ফন্ট ব্যবহার করুন

এটা খুবই দুঃখের বিষয় যে পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের বড় বড় সংস্থারা কেউই প্রায় কম্পিউটারে বাংলা লেখার সময়া ইউনিকোড ফন্ট ব্যবহার করছে না । যেমন পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক পত্রিকাগুলি যেমন আনন্দবাজার, বর্তমান, আজকাল বা প্রতিদিন কেউই তাদের ওয়েবসাইটে ইউনিকোড ফন্ট ব্যবহার করে না । বাংলাদেশের কাগজ গুলোরও একই অবস্থা । এদের নিজেদের মধ্যে কোনও মিল নেই । যেমন আপনার কম্পিউটারে আনন্দবাজারের ফন্ট ইনস্টল থাকলে আপনি বর্তমানের ওয়েবসাইট দেখতে পাবেন না । তার জন্য আপনাকে আলাদা করে ফন্ট ইনস্টল করতে হবে । আর এইসব ফন্টগুলি কোন সার্চ ইঞ্জিন পড়তে পারে না । ফলে আপনি গুগুল বা ইয়াহুতে সার্চ করলে বাংলা খবরের কোন লিঙ্ক পাবেন না । তারপর এইসব ফন্ট ব্যবহার করলে সেটা সার্চ করাও যায় না । ফলে আপনি বিরাট কোন প্রবন্ধের ভিতর থেকে কোনো শব্দ সার্চ করে বের করতে পারবেন না । তারপর অনেকে দাবি করে তাদের সাইট কেবল মাত্র ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার দিয়েই দেখতে হবে অন্য কোন ব্রাউজার ব্যবহার করা যাবে না । এটি একটি অযৌক্তিক দাবি ।

অথচ ইউনিকোড বাংলা ফন্ট ব্যবহার করলে এইসমস্ত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব । যদি সমস্ত বাংলা সাইট ইউনিকোড ফন্টে লেখা হয় তবে একটি মাত্র ইউনিকোড ফন্ট কম্পিউটারে ইনস্টল থাকলেই সমস্ত সাইট দেখা যাবে । আর ইউনিকোডের সুবিধাও প্রচুর । এর ফলে সাইটগুলি পুরোপুরি ভাবে সার্চ ইঞ্জিনের আওতায় এসে যাবে এবং কোন লেখা খুঁজে পাওয়াও সহজ হবে । এছাড়া একই লেখার মধ্যে যদি বিভিন্ন ভাষার লিপি ব্যবহার করার দরকার হয় তাহলে তা সহজেই করা যাবে । আপনি সহজেই গুগুলে সরাসরি বাংলায় টাইপ করে সার্চ করে এই পাতা গুলো খুঁজে পাবেন ।

ইউনিকোড ব্যবহার করার উপযোগিতার প্রমান স্বরূপ বলা যায় যে বড় বড় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি বাংলা লেখার ক্ষেত্রে ইউনিকোড বাংলা ফন্টকেই বেছে নিয়েছে । যেমন মাইক্রোসফট, বিবিসি, উইকিপিডিয়া, । আশার কথা যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও সাইটে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে ইউনিকোড বাংলা ব্যবহার করছেন । ইউনিকোড বাংলা দিয়ে কত সুন্দর সার্চ যোগ্য পোর্টাল তৈরি করা সম্ভব তা জানতে দেখুন বাংলা উইকিপিডিয়া (bn.wikipedia.org)

অনেকের মনেই ধারনা আছে যে বাংলায় টাইপ করা খুব ভজঘট । আমিও তাই ভাবতাম । কিন্তু বর্তমানে আমি অভ্র কি বোর্ডের সাহায্যে খুব তাড়াতাড়ি বাংলা টাইপ করতে পারি । অন্তত হাতে লেখার চেয়ে তো বটেই । অভ্র কি বোর্ড কোন বিশেষ রকমের কিবোর্ড নয় এটি একটি সফটওয়্যার যার সাহায্যে ইংরাজী কিবোর্ড দিয়েই বাংলা টাইপ করা সম্ভব । বাংলা ইউনিকোড ফন্টের সাহায্যে বাংলায় মেল করা সম্ভব এবং চ্যাটিং করা সম্ভব । তাই যাঁরা বাংলা লেখার জন্য রোমান হরফ ব্যবহার করছেন তাঁদের বলি বাংলা ইউনিকোড হরফ ব্যবহার করুন । অভ্র কি বোর্ড একটি ফ্রী সফটওয়্যার এটি আপনি ডাউনলোড করতে পারবেন www.omicronlab.com থেকে । আর এই সফটওয়্যারটির সাহায্যে আপনি নোটপ্যাড বা এমএস ওয়ার্ডে সরাসরি বাংলায় টাইপ করতে পারবেন । এবং ফরম্যাটিংয়ের সমস্ত রকম সুবিধা পাবেন । একটু প্র্যাকটিস করলেই দেখবেন আপনি কত তাড়াতাড়ি টাইপ করতে পারছেন ।

তাই দেরি না করে বাংলিশ ছাড়ুন আর উপভোগ করুন বাংলা লিপিতে বাংলা পড়ার আনন্দ ।