কমিউনিস্ট জোকস্ ৪
এক রাজনৈতিক কৌতুক রচয়িতাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ক্রুশ্চেভের কাছে । ক্রেমলিনে ক্রুশ্চেভের খাস মহল দেখে সে ত হতবাক । বিড়বিড় করে সে বলল
-- কি দারুন সব আসবাবপত্র ! কি দামী দামী কার্পেট ! পর্দা !
ধৃত লোকটিকে আশ্বস্ত করার ভঙ্গিতে ক্রুশ্চেভ বললেন
-- অচিরেই আমাদের দেশের প্রত্যেকের ঘরে ঘরে এসব থাকবে ।
-- কমরেড ক্রুশ্চেভ । কৌতুক রচয়িতা এবার জোর গলায় প্রতিবাদ জানাল, এটা ঠিক হচ্ছে না । হয় শুধু আপনি চুটকি বলবেন, নয় তো শুধু আমি !
একবার শুয়োরের ফার্ম পরিদর্শনে গেছেন ক্রুশ্চেভ । প্রাভদা ইজভেস্তিয়া প্রভৃতি প্রধান প্রধান সংবাদপত্রের সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিকরা গেছেন ওই ঘটনা ‘কভার’ করতে । নানান ভঙ্গিমায় ক্রুশ্চেভের প্রচুর ছবি তোলা হয়েছে । তাঁর বাঁ দিকে শুয়োর, ডান দিকে শুয়োর,।
যথারীতি রাতে সংবাদপত্রের এডিটর, নিউজ এডিটরের টেবিলে জমা পড়েছে সেই সব ছবি । কিন্তু ছবির ক্যাপশন কী হবে ? কেউ পরামর্শ দিলেন , ‘শুয়োরদের মাঝখানে কমরেড ক্রুশ্চেভ’ -- এ ক্যাপশন কেমন হয় ?
-- চলবে না । এডিটর তৎক্ষনাৎ খারিজ করে দিলেন ।
-- ‘তাহলে শুয়োর পরিবেষ্টিত কমরেড ক্রুশ্চেভ ?’
-- না তাও চলবে না । বললেন নিউজ এডিটর । ক্যাপসানে শুয়োর কথাটা থাকলে চলবে না ।
পরের দিন পত্রিকা প্রকাশিত হল । প্রথম পাতায় সেই ছবি । ছবির নিচে ক্যাপসন ।
‘কমরেড ক্রুশ্চেভ -- বাঁ দিক থেকে চতুর্থ ।’
সাংবাদিক পদপ্রার্থীর ইন্টারভিউ নেওয়া হচ্ছে । প্রশ্ন হল :
-- বিপর্যয় এবং দুঃখজনক ঘটনার মধ্যে পার্থক্য কি ?
উত্তর : ধরুন আপনি নতুন স্যুট পরে বেরিয়েছেন রাস্তায় । হঠাৎ চলন্ত গাড়ি আপনার ধোপদুরস্ত পোশাকে এক রাশ কাদা ছিটিয়ে দিল । এটা দুঃখজনক ঘটনা, কিন্তু বিপর্যয় নয় । আবার ধরুন, সোভিয়েত সরকারের সব সদস্যকে নিয়ে একটি বিমান ভেঙে পড়ল সাইবেরিয়ার তুষারঢাকা অঞ্চলে । এটি বিপর্যয়, কিন্তু দুঃখজনক ঘটনা নয় ।
ব্রেঝনেভের আমলের সোভিয়েত ইউনিয়নের গল্প এটি । ইথিওপিয়ার কমিউনিস্ট ফান্ডে সাহায্য করার জন্য স্কুলের ছাত্রদের দশ রুবল করে আনতে বলা হয়েছিল । সবাই আনল শুধু একজন ছাড়া । শিক্ষকমহাশয় কারন জানতে চাইলে সে উত্তর দিল :
-- বাবা বলেছে ইথিওপিয়ায় কমিউনিস্ট পার্টিই নেই !
এক মাস পরে ইথিওপিয়ায় সমাজতান্ত্রিক সরকারকে সাহায্য করবার জন্য আবার ছাত্রদের দশ রুবল করে আনতে বলা হল । সেই ছাত্রটি আবার এল খালি হাতে, বলল :
-- বাবা বলেছে ইথিওপিয়ায় সমাজতান্ত্রিক সরকারই নেই !
আবার এক মাস পরে ছাত্রদের উপর নোটিশ । এবারও বাড়ি থেকে দশ রুবল করে আনতে হবে, কারন ইথিওপিয়ায় দুর্ভিক্ষ পীড়িত মানুযকে সাহায্য করা ।
এবার সেই বালক একসঙ্গে ত্রিশ রুবল এনে শিক্ষকমশায়ের হাতে দিল । বলল :
-- বাবা বলেছে ইথিওপিয়ায় যদি দুর্ভিক্ষ থাকে, তাহলে সেখানে নিশ্চই কমিউনিস্ট পার্টি আছে, আছে সমাজতান্ত্রিক সরকারও !
নিক্সন জানতে চাইলেন ঈশ্বরের কাছে :
-- আমেরিকানরা কবে পুরোপুরি সুখী হবে ?
ঈশ্বর জানালেন আরও ৫০ বছর বাদে ।
-- ততদিন কি আর বেঁচে থাকব, আক্ষেপ করে বললেন নিক্সন ।
পম্পিদু জিজ্ঞেস করলেন ঈশ্বরকে
-- কবে পুরোপুরি সুখী হবে ফরাসীরা ?
ঈশ্বর জবাব দিলেন আরও ৮০ বছর লাগবে ।
ততদিন কি আর বেঁচে থাকব ? পম্পিদুর গলাতেও আক্ষেপের সুর ।
ব্রেঝনেভ প্রশ্ন করলেন ঈশ্বরকে :
-- সোভিয়েত দেশের মানুষ কবে সুখে শান্তিতে থাকবে ?
ততদিন কি আর বেঁচে থাকব ? আক্ষেপের সুরে বললেন স্বয়ং ঈশ্বর !
সোভিয়েত দেশের দুটি বহুল প্রচলিত সংবাদপত্র সম্পর্কে বলা হত :
দেয়ার ইজ নো ইজভেস্তিয়া ইন প্রাভদা, অ্যান্ড দেয়ার ইজ নো প্রাভদা ইন ইজভেস্তিয়া !
উল্লেখ্য ‘প্রাভদা’ শব্দের অর্থ ‘সত্য’ আর ‘ইজভেস্তিয়া’ শব্দের অর্থ ‘খবর’ । কাজেই উপরোক্ত আপ্তবাক্যটির বঙ্গানুবাদ দাঁড়াল
‘সত্যে খবর নেই এবং খবরে সত্য নেই ।’
সোভিয়েত দেশের বহুল প্রচলিত আরও দুটি পত্রিকা হল ‘সোভিয়েত স্কায়া রাশিয়া’ (সোভিয়েত রাশিয়া) এবং ‘ক্রদ’ (শ্রম) । ক্রেতা জিজ্ঞেস করছে সংবাদপত্র বিক্রেতাকে ,
-- কি কি খবরের কাগজ আছে ?
বিক্রেতার উত্তর,
-- ‘সত্য’ নেই ‘সোভিয়েত রাশিয়া’ বিক্রি হয়ে গেছে, আছে শুধু তিন কোপেক দামের ‘শ্রম’ ।
জনগন কি কি সংবাদপত্র পড়েন তা জানার জন্য সরকারী পর্যায়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল । সমীক্ষক দলের সদস্য এক সোভিয়েত নাগরিককে প্রশ্ন করলেন,
-- কোন পত্রিকা পড়েন এবং কেমন আছেন ?
উত্তরে বললেন ওই সোভিয়েত নাগরিক :
-- পড়ি প্রাভদা, নইলে ভাল আছি জানব কি করে?
1 comment:
moja pelam..
Post a Comment